সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

বর্তমান সময়ের ইসলাম সংক্রান্ত সমস্যার উপর সংক্ষিপ্ত আলোকপাত -- ৭. ধর্মপ্রচারে দল পদ্ধতির সমস্যা : introduction of new concept

ইসলামের ইতিহাস হাজার বছরের পুরনো। কিন্তু বিশ্বে ইসলাম প্রচারে দল পদ্ধতির উদ্ভব ঘটেছে সাম্প্রতিককালে। একটি ব্যানার তৈরী করে তার নিচে বিভিন্ন মানুষ সমবেত হয়ে বিভিন্ন ইসলামী কর্মকাণ্ড করছে। এটা সুস্পষ্ট যে, ইসলাম প্রচার কিংবা ইসলামী কর্মকাণ্ড করার জন্য মুহাম্মদ (সা.) কোনো নাম দিয়ে দল তৈরী করেননি। অর্থাৎ, বর্তমানে আমরা যে ইসলামী দলগুলো দেখি, অনুরূপ concept আল্লাহর রাসূল (সা.) প্রণয়ন করেননি। আল্লাহ রাসূল (সা.) যা করেননি, যা বিগত হাজার বছরেও প্রয়োজন হয়নি, এখন হঠাৎ কেনো তা প্রয়োজন হচ্ছে? যারা ইসলামের নামে বিভিন্ন দল প্রতিষ্ঠা করেছেন এবং সেই দলের নেতা-কর্মী, তারা অবশ্যই এর পক্ষে নানান যুক্তি উপস্থাপন করবেন। স্পষ্টতঃই সেগুলো কুরআন-হাদীস-ইসলামের সংকীর্ণ ব্যাখ্যা, partial representation, ইসলামের প্রাথমিক স্তরসমূহের কমপ্লিট আন্ডারস্ট্যান্ডিং না থাকা ও জ্ঞান অর্জনের সঠিক পন্থা অনুসরণ না করার ফসল। প্রতিটা গ্রুপই নিজেদেরকে প্রতিষ্ঠা করার জন্য কুরআন-হাদীসের সংকীর্ণ ব্যাখ্যা (বা অপব্যাখ্যার) রেফারেন্সিয়াল যুদ্ধে অবতীর্ণ হওয়ার আহবান জানায়, এবং মানুষের অজ্ঞতার সুযোগ নিয়ে নিজের মতকে বাহ্যিকভাবে প্রতিষ্ঠিত করে। অথচ ইসলামের দ্বীন হিসেবে পরিপূর্ণতা মানে কী? দ্বীন হিসেবে ইসলামের পরিপূর্ণতার মানে হলো, concept হিসেবে ইসলাম পরিপূর্ণ। এখন, এই কনসেপ্ট স্থান-কাল-পাত্র-পরিবেশ-সভ্যতা ইত্যাদি ভেদে একই থাকবে। যেমন, মুহাম্মদ (সা.) ইসলাম প্রচার করেছেন। সেই যুগে মাইক ছিলো না, তিনি প্রয়োজনে পাহাড়ের উপরে উঠে মানুষকে ডেকে কথা বলেছেন। এই যুগে মাইক্রোফোন আছে, টিভি-ইন্টারনেট-ভিডিও স্ক্রিন ইত্যাদি আছে, কিন্তু এগুলো ব্যবহার করেও আমরা কনসেপ্টটাকে সমুন্নত রাখতে পারি, আর তা হলো : একজন ধর্মপ্রচারক কথার মাধ্যমে মানুষকে সরাসরি ইসলামের দিকে, আল্লাহর দিকে আহবান করবেন। তিনি ইসলামের জন্য কোনো নাম দিয়ে দল তৈরী করেননি, এবং মানুষকে সেই দলের পতাকাতলে সমবেত হবার আহবান জানাননি। অর্থাৎ দলের কনসেপ্ট আল্লাহর রাসূল (সা.) ইন্ট্রোডিউস করেননি।
নবীজি যুদ্ধের কনসেপ্ট দিয়ে গেছেন। সেই যুগের সভ্যতায় যুদ্ধের কনসেপ্ট ঘোড়া, তলোয়ার, তীর ইত্যাদিকে কেন্দ্র করে কাজ করেছে। বর্তমান যুগে আধুনিক অস্ত্রশস্ত্রকে কেন্দ্র করে কাজ করবে, কিন্তু কনসেপ্ট একই থাকবে।

এখানে স্পষ্টভাবে লক্ষ্য করা দরকার যে, নবীর দায়িত্ব-কর্তব্য কী। নবী তাঁর দায়িত্ব, অর্থাৎ ইসলাম প্রচার যেই পন্থায় পালন করেছেন, সেই পন্থা পরিপূর্ণ, এবং সেই পন্থার সংস্করণের প্রয়োজন বা এখতিয়ার, কোনোটিই আমাদের নেই। কিন্তু অন্যান্য বিষয়, যেমন অস্ত্র তৈরী বা গৃহনির্মাণ, ইত্যাদি যেগুলো নবীর মূল দায়িত্ব নয়, সেক্ষেত্রে নবীর গৃহীত পদ্ধতি অনুসরণ করা বাধ্যতামূলক নয়। এবং এক্ষেত্রে নতুন পদ্ধতি (গৃহনির্মাণ পদ্ধতি, অস্ত্র তৈরী ও চালনা পদ্ধতি ইত্যাদি) আমরা উদ্ভাবনও করতে পারি, এবং পুরনো পদ্ধতির সংস্কারও করতে পারি। কিন্তু নবীর মূল যে দায়িত্ব, সেই পদ্ধতিতে, সেই কনসেপ্টে হাত দেয়ার এখতিয়ার আল্লাহ তায়ালা আমাদেরকে দেননি। কেউ যদি তা করে, অর্থাৎ নবীর যে দায়িত্ব ছিলো, সেই একই দায়িত্ব দ্বীন প্রচারে নবীর অনুসৃত মূলনীতি, পন্থা, কনসেপ্ট অনুসরণ না করে, তবে সে নবীর চেয়ে আগ বাড়িয়ে কাজ করবে, যা স্পষ্টতঃ নিষেধ, যা কিনা নবীর জ্ঞানকে অসম্পূর্ণ মনে করা, দ্বীন হিসাবে ইসলামের কমপ্লিটনেসকে অস্বীকার করা।

আসলে ইসলামের মৌলিক বিষয়ের জ্ঞান এত বেশি গুরুত্বপূর্ণ যে, শাখা-প্রশাখাগত সব বিষয় বাদ দিয়ে আগে মৌলিক বিষয় সম্পর্কে নিশ্চিত জ্ঞান অর্জন করা উচিত। কেউ যখন নবীকে পরিপূর্ণভাবে না চেনে, তখন সে নবীর চেয়ে আগ বাড়িয়ে কাজ করে। কিংবা নবীর আদেশের তুলনায় কম কাজ করে। দুটোই আল্লাহ তায়ালা নিষেধ করেছেন। শেষ নবী, যাঁর মাধ্যমে আল্লাহ তা'আলা তাঁর দ্বীনকে পূর্ণ করে দিয়েছেন, তাকে চিনতে হবে আগে!

যারা ইসলামের নামে বিভিন্ন নাম দিয়ে দল প্রতিষ্ঠা করেছেন, এবং সেটার পক্ষে বিভিন্ন রেফারেন্স এনে ইসলামের সংকীর্ণ ব্যাখ্যা করছেন, তাদের চিন্তা করে দেখা উচিত যে, আল্লাহর রাসূল (সা.) কি জানতেন না? দলের কনসেপ্ট কি তাঁর ছিলো না? Conceptually ইসলামের পরিপূর্ণতার মানে হলো এই যে, ইসলাম ও ইসলাম সংক্রান্ত যত কর্মকাণ্ড, যা একজন নবীর দায়িত্ব-কর্তব্য, সেগুলোর conceptual পরিপূর্ণতা। অর্থাৎ, নীতিগতভাবে, পদ্ধতিগতভাবে মুহাম্মদ (সা.) যা করেছেন, কেয়ামত পর্যন্ত একই কনসেপ্ট ব্যবহার করা যাবে, যুগের সাথে সেই কনসেপ্ট অকার্যকর হয়ে পড়বে না। কনসেপ্ট হিসেবে ইসলামের পরিপূর্ণতা বুঝতে না পারলে তখনই মানুষ ইসলাম প্রচারের জন্য এমন নতুন পন্থা আবিষ্কার করে, যা আল্লাহ রাসূল (সা.) করেননি।

সাময়িকভাবে দলীয় পদ্ধতিতে ইসলামের প্রচার-প্রসার যদি সাফল্য এনেও দেয়, তবুও সেটাকে পরিহার করতে হবে এই যুক্তিতে যে, নবী তাঁর দায়িত্ব পালনে যেই পদ্ধতি ব্যবহার করেছেন, যেই কনসেপ্টের অনুসরণ করেছেন, সেই একই দায়িত্ব পালনে আমরা ভিন্ন কোনো কনসেপ্ট ব্যবহারের অধিকার রাখি না। ইসলাম প্রচার করা নবীর দায়িত্ব ছিলো, অতএব এই কাজটি তিনি যেভাবে করেছেন, হুবহু একই কনসেপ্ট আমাদেরকে অনুসরণ করতে হবে। এর কম-বেশি করা যাবে না। এর কম-বেশি করার অর্থই হলো নবীর জ্ঞানকে চ্যালেঞ্জ করা, আর নবীর জ্ঞানকে চ্যালেঞ্জ করা মানে আল্লাহর জ্ঞানকে চ্যালেঞ্জ করা। আল্লাহ তা'আলা যখন কুরআনকে শেষ ঐশী কিতাব করেছেন, মুহাম্মদ (সা.)কে যখন শেষ নবী করেছেন এবং ইসলামকে যখন পূর্ণতা দান করেছেন, তখন এসবেরই অর্থ হলো এই যে, কেয়ামত পর্যন্ত ঐ কনসেপ্টগুলো ব্যবহার-উপযোগী থাকবে, যুগের সাথে কিংবা স্থান-কাল-পাত্র-পরিবেশ ইত্যাদি ভেদে অকার্যকর হয়ে যাবে না। এবং তার চেয়ে উন্নত কোনো কনসেপ্টও কখনো থাকা সম্ভব নয়, দ্বীনের কাজ করার জন্য নবীজির অনুসৃত পন্থার চেয়ে উন্নততর কোনো পন্থা থাকা সম্ভব নয়। তবে এই আধুনিক যুগে নতুন এমন কী অবস্থার উদ্ভব ঘটলো যে, শেষ নবী যেই কনসেপ্ট, যেই পদ্ধতি অনুসরণ করে দ্বীনের কাজ করেছেন, সেই পদ্ধতি অকার্যকর হয়ে গেলো? কিংবা তার চেয়েও উত্তম কোনো পদ্ধতি আমরা সাধারণ মানুষেরা, যারা সরাসরি আল্লাহর কাছ থেকে ওহী-ও পাই না, সেই সাধারণ মানুষেরা আবিষ্কার করবো?

এ ধরণের কাজ তখনই সম্ভব, যখন কেউ নবীকে চেনে না, নবীকে চিনলেও নবুওয়্যাতের সম্পর্কে পরিপূর্ণ জ্ঞান রাখে না, কিংবা তা হলেও কনসেপ্ট হিসেবে ইসলাম, কুরআন ও মুহাম্মদের (সা.) কথা-কর্মের আধুনিকতা বোঝে না। ইসলামের যত বড় পণ্ডিতই হোক না কেনো, কেউ যদি শেষ নবীর যে দায়িত্ব ছিলো, সেই ইসলাম প্রচারের কাজে শেষ নবীর অনুসৃত কনসেপ্ট এর বাইরে অন্য কোনো কনসেপ্ট আবিষ্কার করে বা অনুসরণ করে, তখন অবশ্যই তিনি ইসলামের, কুরআনের ও শেষ নবীর কথা-কর্মের আধুনিকতা, সর্বজনীনতা ও স্থান-কালের-উর্ধ্ব কনসেপ্ট হওয়াকে পরিপূর্ণ অনুধাবন করতে ব্যর্থ হয়েছেন। এরপর সেই দলের যদি লক্ষ-কোটি অনুসারীও হয়, এমনকি সেই দল যদি গোটা মুসলিম বিশ্বের অর্ধেককেও গ্রাস করে ফেলে, তবুও তারা সঠিক পথের উপর নাই, এবং নবীর চেয়ে আগ বাড়িয়ে কাজ করছেন। আর নবীর চেয়ে আগ বাড়িয়ে কাজ করলে আমল ধ্বংস হয়ে যাবার ব্যাপারে আল্লাহ তা'আলা কুরআনে কঠোরভাবে সতর্ক করেছেন।

ইসলামের মৌলিক বিষয়ে (তাওহীদ-আখিরাত-রিসালাত ইত্যাদি) সঠিক পদ্ধতিতে জ্ঞান অর্জন ও প্রাথমিক স্তর থেকে শুরু করে প্রতিটা স্তরের কমপ্লিট আন্ডারস্ট্যান্ডিং একারণে এতটাই গুরুত্বপূর্ণ।


এই ফিলোসফিকাল আলোচনাগুলো কোথায় হবে? কাদের কাছে উপস্থাপন করা হবে? না ধর্মীয় দলগুলোর নীতিনির্ধারক ও নেতাগণ রিসার্চার যে, তাঁদের কাছে গিয়ে বিষয়গুলো উপস্থাপন করা হবে, আর না দেশে কমপ্লিট রিলিজিয়াস রিসার্চ সেন্টার আছে যে, সেখানে বিষয়গুলো পেশ করা হবে। না আলেমসমাজ ঐক্যবদ্ধ যে তাঁদের সকলের কাছে বিষয়টি পেশ করা হবে। কোনো ধর্মীয় দল বা ধর্মীয় নেতার ধারণা যদি এমন হয় যে, প্রয়োজনীয় জ্ঞান অর্জন হয়ে গিয়েছে, এখন শুধু কাজ করে যেতে হবে, তখন ঐ মুহুর্ত থেকেই জ্ঞানচর্চার দুয়ার বন্ধ হয়ে যায়। ধর্মীয় দলগুলোর এই অবস্থাই ঘটেছে। যখন কেউ নিজেদের প্রয়োজনে নিয়মিত জ্ঞানচর্চা করে না, তখন তাদের কাছে এসব মৌলিক ফিলোসফি উপস্থাপন করেও খুব একটা লাভ হয় না। অথচ ধর্মপ্রচারে দল পদ্ধতি ইসলামের ভয়াবহ ক্ষতি ডেকে আনছে, যদিও বাহ্যিকভাবে কখনো কখনো এর ভালো ফলাফল দেখা যায়। ধর্মপ্রচারে দল পদ্ধতির সমস্যার আলোচনা conceptual level এ আপাততঃ এটুকুই যথেষ্ট।

পরবর্তী পোস্ট :  ইসলামী দল

আলোচিত বিষয়সমূহ



মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

টাকার ইতিহাস, মানি মেকানিজম ও ব্যাঙ্কিং সিস্টেমের মহা জুলুম

ভূমিকা: জালিমের বিরুদ্ধে বুদ্ধিবৃত্তিক সংগ্রাম  (মহররম: ইনফো সিরিজ এর শেষ পোস্ট ছিল এটা। মূল সিরিজটি পড়ে আসুন ) জুলুমের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের মাস হলো মহররম মাস। জালিমের মুখোশ উন্মোচনের মাস মহররম। জুলুমের কূটকৌশল উন্মোচনের মাস মহররম। আধুনিক সেকুলার গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় লেজিসলেশান (সংসদ), আর্মড ফোর্সেস (আর্মি) ও জুডিশিয়ারি (আদালত) হলো এক মহা জুলুমের ছদ্মবেশী তিন যন্ত্র, যারা পরস্পর পরস্পরকে সাহায্য করে জুলুম টিকিয়ে রাখার জন্য। তারচেয়েও বড় জালিম হলো big corporations: বড় বড় মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি, যারা তাবৎ দুনিয়াকে দাস বানিয়ে রেখেছে। আর এই দাসত্বের শৃঙ্খলে তারা আমাদেরকে আবদ্ধ করেছে ব্যাঙ্কিং সিস্টেমের মাধ্যমে: টাকা আমাদের শ্রমকে ধারণ করে, অথচ সেই টাকার মূল্য আপ-ডাউন করায় অন্যরা -- ব্যাংক ব্যবসায়ীরা! টাকা আমাদের শ্রমকে সঞ্চয় করার মাধ্যম, অথচ সেই টাকা আমরা প্রিন্ট করি না, প্রিন্ট করে (ব্যাংকের আড়ালে) কিছু ব্যবসায়ী! সেই টাকার মান কমে যাওয়া (বা বেড়ে যাওয়া) আমরা নির্ধারণ করি না -- নির্ধারণ করে ব্যাঙ্ক (ব্যবসায়ীরা)! ইমাম হুসাইনের (আ.) প্রতিবাদী চেতনাকে ধারণ করব, শোকাহত হ

ধর্মব্যবসা: মুসলমানদের হাতে ইসলাম ধ্বংসের অতীত-বর্তমান (১)

ভূমিকা যদিও পলিটিকাল-রিলিজিয়াস ইস্যুতে নিশ্ছিদ্র আর্গুমেন্ট উপস্থাপন করে আলোচনা করার অভ্যাস আমার, কিন্তু এখানে বিস্তারিত ইতিহাস তুলে ধরে আর্গুমেন্ট করার প্রথমতঃ ইচ্ছা নেই, দ্বিতীয়তঃ সময় ও সুযোগ নেই। আমি যা সত্য বলে জানি, তা সংক্ষেপে তুলে ধরছি। যারা আমার উপর আস্থা রাখেন তাদের জন্য এই লেখাটি সোর্স অব ইনফরমেশান, উন্মুক্ত হৃদয়ের মানুষদের জন্য সত্য অনুসন্ধানের নতুন কিছু টপিক, আর প্রেজুডিসড ধর্মান্ধ রোগগ্রস্ত অন্তরের জন্য রোগ বৃদ্ধির উছিলা। শেষ পর্যন্ত আর্গুমেন্ট ও ডায়লগের দুয়ার উন্মুক্ত রাখার পক্ষপাতী আমি, কিন্তু সেই আর্গুমেন্ট অবশ্যই সত্য উন্মোচনের নিয়তে হওয়া উচিত, নিজের দীর্ঘদিনের লালিত বিশ্বাস ও ধ্যান ধারণাকে প্রতিষ্ঠা করবার উদ্দেশ্যে নয়। মক্কা-মদীনা: মুহাম্মদ (সা.) থেকে আলে-সৌদ (৬২৯-১৯২৪) এদেশের অধিকাংশ মানুষ মক্কা-মদীনার ইতিহাস কেবল এতটুকু জানেন যে, মুহাম্মদ (সা.) মদীনায় ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেন এবং পরবর্তীতে বিনা রক্তপাতে মক্কা বিজয় করেন। কিন্তু প্রায় চৌদ্দশ’ বছর আগে মুহাম্মদ (সা.) এর প্রতিষ্ঠিত ইসলামী রাষ্ট্র থেকে আজকের রাজতান্ত্রিক সৌদি আরবের ইতিহাস কম মানুষই জানেন। প

পিস টিভি, জাকির নায়েক ও এজিদ প্রসঙ্গ

সম্প্রতি গুলশান হামলার পরিপ্রেক্ষিতে ইন্ডিয়া ও বাংলাদেশে পিস টিভির সম্প্রচার বন্ধ করা হয়েছে। আমি তখন দিল্লীতে ছিলাম। দেশে ফিরে শুনি পিস টিভি ব্যান করা হয়েছে বাংলাদেশে, এবং তার আগে ইন্ডিয়াতে। আমার বাসায় টিভি নেই, এবং আমি জাকির নায়েকের লেকচার শুনিও না। কিংবা পিস টিভিতে যারা লেকচার দেন, বাংলা কিংবা ইংলিশ -- কোনোটাই শুনি না; প্রয়োজন হয় না। তাছাড়া আমার ইসলামের বুঝ জাকির নায়েকসহ পিস টিভি ও তার বক্তাদেরকে ইন জেনারেল আমার কাছে অগ্রহণযোগ্য করে তুলেছে। Peace TV বন্ধ হওয়ায় এদেশে বিকৃত ইসলাম প্রসারের গতি কমলো -- এটাই আমার মনে হয়েছে। একইসাথে আমি এটাও মনে করি যে, যেই অভিযোগ পিস টিভিকে ব্যান করা হয়েছে, তা নিছক অজুহাত। জাকির নায়েক কখনো জঙ্গীবাদকে উস্কে দিয়েছেন বলে আমার জানা নেই। কিংবা পিস টিভির লেকচার শুনে শুনে ISIS জঙ্গীরা সন্ত্রাসী হয়েছে -- এটা নিতান্তই হাস্যকর কথা। ISIS এর ধর্মতাত্ত্বিক বেইজ সম্পর্কে মোটেও ধারণা নেই, এমন লোকের পক্ষেই কেবল ISIS এর জন্য জাকির নায়েককে দোষ দেয়া সম্ভব। একইসাথে আমি এ বিষয়েও সচেতন যে, পিস টিভি বন্ধ করা হয়েছে আমাদের সরকারের রেগুলার “ইসলামবিরোধী কর্মকাণ্ডের অংশ