সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

জাতিসংঘ কর্তৃক প্রকাশিত যৌনশিক্ষার আন্তর্জাতিক গাইডলাইন: মানবতার বিরুদ্ধে মহা ষড়যন্ত্র

৫-৮ বছরের শিশুদের শিক্ষা দিতে হবে যে --
- 'পরিবার' বিভিন্ন রকম হতে পারে, বর্ধিত পরিবার, একক পরিবার, সমকামী জুটির পরিবার।
- বন্ধু বিভিন্নরকম হতে পারে: ভালো/খারাপ বন্ধু, বয়ফ্রেন্ড, গার্লফ্রেন্ড।
- ভালোবাসা 'বিভিন্ন' ধরণের হয়, আর সেগুলো প্রকাশ করার 'বিভিন্ন' উপায়।
- প্রত্যেক মানুষই 'তার মতো করে' আলাদা, এবং 'যে যেমন', তাকে সেভাবেই 'মেনে' নিতে হবে।
- প্রতেকেরই নিজের সিদ্ধান্ত নিজে নেবার অধিকার আছে। তবে কিছু কিছু ডিসিশান নেবার ক্ষেত্রে বড়দের সাহায্য লাগতেও (!) পারে।

৯-১২ বছরের শিশুদের বলতে হবে যে --
- তাদের স্বাধীন (!) সিদ্ধান্তকে তাদের পিতামাতার সাপোর্ট করতে হবে (!)।
- ছেলে-মেয়ে সম্পর্কে প্রচলিত ধারণাগুলো সবধরণের 'পারসোনাল রিলেশনকে' ক্ষতিগ্রস্ত করে। (অতএব, নারী-পুরুষের মাঝে পার্থক্যের দেয়াল তুলে দিতে হবে!)
- সমকামিতা, পশুকামিতা ইত্যাদিকে মন্দ বলা যাবে না। সমকামী, পশুকামী ইত্যাদি ব্যক্তিদেরকে 'রক্ষা' করতে হবে।
- ছেলে-মেয়েরা ইচ্ছায় বা অনিচ্ছায় বাচ্চা জন্ম দিয়ে ফেলে বাবা-মা হয়ে যেতেই পারে।
- 'নীতি-নৈতিকতার' উৎস হলো (স্রষ্টা নয়, বরং) সমাজ/ সংস্কৃতি। 'নেগেটিভ' সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গিকে রুখে দিতে হবে (যেমন, সমকামিতা, অ্যাবরশন, লিভ টুগেদার ইত্যাদির প্রতি নেতিবাচক মনোভাব রুখে দিতে হবে)।

১২-১৫ বছর বয়সীদেরকে বলতে হবে যে--
- ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্বের মাঝেমাঝে যৌনতা চলে আসতেই পারে।
- সমকামিতা, পশুকামিতা ইত্যাদিকে মন্দ বলা যাবে না। সমকামী, পশুকামী ইত্যাদি ব্যক্তিদেরকে 'রক্ষা' করতে হবে।
- কেউ তাদের বিরুদ্ধে কথা বললে তারা 'প্রতিক্রিয়াশীল', তাদের বিরুদ্ধে কথা বলতে হবে।
- 'আর্লি ম্যারেজ' যে ক্ষতিকর, তা বুঝাতে হবে।
- "বাবা পুরুষ বলে ওমুক ওমুক কাজ করবে, মা নারী বলে ওমুক ওমুক কাজ করবে", এধরণের ধারণা ভেঙে দিতে হবে।
- "যার যার নৈতিকতা তার তার" -- অন্যের বিশ্বাস/ নৈতিকতা (যেমনই হোক না কেন, তা) মেনে নিতে হবে। এটাই 'টলারেন্স' ও 'রেসপেক্ট'।
- "আমার যৌনজীবন, আমার ইচ্ছা, আমার সিদ্ধান্ত" - এই দৃঢ়তা অর্জন করা। (অতএব, LGBT হলেও সেটা 'OK')

- তাদের জন্য নিরাপদ গর্ভপাত সহজলভ্য করতে হবে।

১৫-১৮ বছর বয়সীদের জানাতে হবে যে --
- তারা (অবৈধ যৌনসম্পর্ক এবং অতঃপর) গর্ভপাত করলে, কিংবা 'অ্যারেঞ্জড ম্যারেজ'-এ রাজি না হলে, কিংবা সমকামী হলে পরিবার তার প্রতি খারাপ আচরণ করতে পারে, এবং ..
- এমন সময়ে তাকে সাপোর্ট দেবার জন্য (এনজিও, ইত্যাদি) প্রতিষ্ঠান আছে (অতএব, ভয় পেও না, এগিয়ে যাও!)।
- নারীর ক্ষমতায়নের কনসেপ্ট।
- (উপরিউক্ত বিষয়সমূহকে আইন করে প্রতিষ্ঠা করতে হবে, এবং ) সেসমস্ত আইন সম্পর্কে জানাতে হবে।
- কোন কোন ক্ষেত্রে বাচ্চা নেয়া উচিত, আর কোন কোন ক্ষেত্রে বাচ্চা নেয়া উচিত নয়।
- পিতামাতা সন্তানকে তাদের চিন্তাধারা / নীতি-নৈতিকতা শিখাতে চায়। অথচ সন্তানের (যৌনতা বিষয়ে) বিশ্বাস ভিন্ন হতেই পারে (সমকামিতা, পশুকামিতা, শিশুকামিতা, গ্রুপ সেক্স ইত্যাদি), তা পিতা-মাতার মেনে নেয়া উচিত।
- "আমি কেমন হবো (সমকামী, উভকামী, বহুকামী), সে সিদ্ধান্ত নেয়ার অধিকার একান্তই আমার।"
- একইভাবে আরেকজন সমকামী, উভকামী, বহুকামী ইত্যাদি যা খুশি হতে পারে -- সেটা তার অধিকার। তার এই 'অধিকার' (!) রক্ষা করতে হবে।

-- যৌনশিক্ষার আন্তর্জাতিক গাইডলাইন ২০০৯, ইউনেস্কো, জাতিসংঘ।
২০৩০ সালের মধ্যে এগুলি পুরোপুরি বাস্তবায়ন করার টার্গেট বেঁধে দিয়েছে জাতিসংঘ। বাংলাদেশে অলরেডি 'শারীরিক শিক্ষা' নামক বইয়ে এর কিছু কিছু বাস্তবায়িত হয়েছে। এছাড়াও 'সেক্স এজুকেশান' ক্লাস শুরু হয়েছে, বিবিসি এ নিয়ে ভিডিও রিপোর্টও করেছে অলরেডি।
________________________


৯৮ পেইজের ডকুমেন্ট, ফজরের পর থেকে পড়তেসি, আর পারতেসি না, মাথা ভোঁ ভোঁ করতেসে। পরে বিস্তারিত গুছিয়ে ডকুমেন্টারি টাইপ কিছু করার চেষ্টা করব ইনশাআল্লাহ। এগুলো নিয়ে রিসার্চ করাটা অত্যন্ত স্ট্রেসফুল :'(


মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

টাকার ইতিহাস, মানি মেকানিজম ও ব্যাঙ্কিং সিস্টেমের মহা জুলুম

ভূমিকা: জালিমের বিরুদ্ধে বুদ্ধিবৃত্তিক সংগ্রাম  (মহররম: ইনফো সিরিজ এর শেষ পোস্ট ছিল এটা। মূল সিরিজটি পড়ে আসুন ) জুলুমের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের মাস হলো মহররম মাস। জালিমের মুখোশ উন্মোচনের মাস মহররম। জুলুমের কূটকৌশল উন্মোচনের মাস মহররম। আধুনিক সেকুলার গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় লেজিসলেশান (সংসদ), আর্মড ফোর্সেস (আর্মি) ও জুডিশিয়ারি (আদালত) হলো এক মহা জুলুমের ছদ্মবেশী তিন যন্ত্র, যারা পরস্পর পরস্পরকে সাহায্য করে জুলুম টিকিয়ে রাখার জন্য। তারচেয়েও বড় জালিম হলো big corporations: বড় বড় মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি, যারা তাবৎ দুনিয়াকে দাস বানিয়ে রেখেছে। আর এই দাসত্বের শৃঙ্খলে তারা আমাদেরকে আবদ্ধ করেছে ব্যাঙ্কিং সিস্টেমের মাধ্যমে: টাকা আমাদের শ্রমকে ধারণ করে, অথচ সেই টাকার মূল্য আপ-ডাউন করায় অন্যরা -- ব্যাংক ব্যবসায়ীরা! টাকা আমাদের শ্রমকে সঞ্চয় করার মাধ্যম, অথচ সেই টাকা আমরা প্রিন্ট করি না, প্রিন্ট করে (ব্যাংকের আড়ালে) কিছু ব্যবসায়ী! সেই টাকার মান কমে যাওয়া (বা বেড়ে যাওয়া) আমরা নির্ধারণ করি না -- নির্ধারণ করে ব্যাঙ্ক (ব্যবসায়ীরা)! ইমাম হুসাইনের (আ.) প্রতিবাদী চেতনাকে ধারণ করব, শোকাহত হ

ধর্মব্যবসা: মুসলমানদের হাতে ইসলাম ধ্বংসের অতীত-বর্তমান (১)

ভূমিকা যদিও পলিটিকাল-রিলিজিয়াস ইস্যুতে নিশ্ছিদ্র আর্গুমেন্ট উপস্থাপন করে আলোচনা করার অভ্যাস আমার, কিন্তু এখানে বিস্তারিত ইতিহাস তুলে ধরে আর্গুমেন্ট করার প্রথমতঃ ইচ্ছা নেই, দ্বিতীয়তঃ সময় ও সুযোগ নেই। আমি যা সত্য বলে জানি, তা সংক্ষেপে তুলে ধরছি। যারা আমার উপর আস্থা রাখেন তাদের জন্য এই লেখাটি সোর্স অব ইনফরমেশান, উন্মুক্ত হৃদয়ের মানুষদের জন্য সত্য অনুসন্ধানের নতুন কিছু টপিক, আর প্রেজুডিসড ধর্মান্ধ রোগগ্রস্ত অন্তরের জন্য রোগ বৃদ্ধির উছিলা। শেষ পর্যন্ত আর্গুমেন্ট ও ডায়লগের দুয়ার উন্মুক্ত রাখার পক্ষপাতী আমি, কিন্তু সেই আর্গুমেন্ট অবশ্যই সত্য উন্মোচনের নিয়তে হওয়া উচিত, নিজের দীর্ঘদিনের লালিত বিশ্বাস ও ধ্যান ধারণাকে প্রতিষ্ঠা করবার উদ্দেশ্যে নয়। মক্কা-মদীনা: মুহাম্মদ (সা.) থেকে আলে-সৌদ (৬২৯-১৯২৪) এদেশের অধিকাংশ মানুষ মক্কা-মদীনার ইতিহাস কেবল এতটুকু জানেন যে, মুহাম্মদ (সা.) মদীনায় ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেন এবং পরবর্তীতে বিনা রক্তপাতে মক্কা বিজয় করেন। কিন্তু প্রায় চৌদ্দশ’ বছর আগে মুহাম্মদ (সা.) এর প্রতিষ্ঠিত ইসলামী রাষ্ট্র থেকে আজকের রাজতান্ত্রিক সৌদি আরবের ইতিহাস কম মানুষই জানেন। প

পিস টিভি, জাকির নায়েক ও এজিদ প্রসঙ্গ

সম্প্রতি গুলশান হামলার পরিপ্রেক্ষিতে ইন্ডিয়া ও বাংলাদেশে পিস টিভির সম্প্রচার বন্ধ করা হয়েছে। আমি তখন দিল্লীতে ছিলাম। দেশে ফিরে শুনি পিস টিভি ব্যান করা হয়েছে বাংলাদেশে, এবং তার আগে ইন্ডিয়াতে। আমার বাসায় টিভি নেই, এবং আমি জাকির নায়েকের লেকচার শুনিও না। কিংবা পিস টিভিতে যারা লেকচার দেন, বাংলা কিংবা ইংলিশ -- কোনোটাই শুনি না; প্রয়োজন হয় না। তাছাড়া আমার ইসলামের বুঝ জাকির নায়েকসহ পিস টিভি ও তার বক্তাদেরকে ইন জেনারেল আমার কাছে অগ্রহণযোগ্য করে তুলেছে। Peace TV বন্ধ হওয়ায় এদেশে বিকৃত ইসলাম প্রসারের গতি কমলো -- এটাই আমার মনে হয়েছে। একইসাথে আমি এটাও মনে করি যে, যেই অভিযোগ পিস টিভিকে ব্যান করা হয়েছে, তা নিছক অজুহাত। জাকির নায়েক কখনো জঙ্গীবাদকে উস্কে দিয়েছেন বলে আমার জানা নেই। কিংবা পিস টিভির লেকচার শুনে শুনে ISIS জঙ্গীরা সন্ত্রাসী হয়েছে -- এটা নিতান্তই হাস্যকর কথা। ISIS এর ধর্মতাত্ত্বিক বেইজ সম্পর্কে মোটেও ধারণা নেই, এমন লোকের পক্ষেই কেবল ISIS এর জন্য জাকির নায়েককে দোষ দেয়া সম্ভব। একইসাথে আমি এ বিষয়েও সচেতন যে, পিস টিভি বন্ধ করা হয়েছে আমাদের সরকারের রেগুলার “ইসলামবিরোধী কর্মকাণ্ডের অংশ