সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

পোস্টগুলি

2016 থেকে পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে

টুকরাচিন্তা

# টুকরাচিন্তা তারিক আর সাইফুদ্দিন দুই নাম্বারে নেমে গেলো। রিকশা এগুতে লাগলো। চিন্তার জগতে আর কিছুকে ঢুকতে দিতে চাই না। রাস্তার ক্ষণস্থায়ী মেমোরিকেও নয়। তাই আমি কোনোকিছুর দিকে নজর না দেবার উদ্দেশ্যে দৃষ্টির লেভেলটাকে উপরে উঠিয়ে দিলাম। সেখানে আকাশ। আকাশ। ল্যাম্পপোস্ট। গাছ। তারপর আবার আকাশ। সেখানে আজকে অদ্ভুত দৃশ্য দেখেছি। কেউ কি কখনো শঙ্খচিলকে বাসা বানানোর জন্য খড় নিয়ে যেতে দেখেছেন ? আমি আজকে সেই দৃশ্য দেখেছি। বেশ নিচু দিয়ে উড়ে যাচ্ছিলো পাখিটা ! শঙ্খচিল, কিংবা বাজপাখি, যা-ই বলুন  না কেনো ওটাকে। আমার কাছে শঙ্খচিল। আকাশের অনেক উঁচুতে পাখা না ঝাপটিয়ে দীর্ঘক্ষণ ডানাদুটি মেলে উড়ে বেড়ানো যেকোনো পাখিই আমার কাছে শঙ্খচিল। জীবননান্দের শঙ্খচিলের উপমাটা আমার ভালো লেগেছে, কিন্তু সেটাতে আমি একটু বেহেশতের রঙ লাগিয়ে নিয়েছি। তারপর সেটা হয়ে গিয়েছে এক অদ্ভুত সন্ন্যাসী, সাধু, কিংবা সূফি ! আর আমি হয়েছি গৃহী। আমি জমিনের সাথে মিশে আছি। আকাশে আসলে কোনো স্থানই নেই ! কী আর করা। তাই শঙ্খচিল দেখতে তাকে বন্দী করেছি। সাত আসমানের 'পার বসবাস যে শঙ্খচিলের, তাকে যদি মর্ত্যের মায়ায় বন্দী করা যায়, তবে সেটা বড় জুলুম

ইসলাম - গাদীরে খুম

গাদীরে খুমের উপেক্ষাই মুসলমানদের দূর্দশার কারণ। এবং দুঃখজনক হলেও সত্য, এর গোটা ব্যাপারটাই মুসলমানদের in-house ব্যাপার; বহিঃশত্রুর কোনো হস্তক্ষেপে নয়। গাদীরে খুমের ঘটনা কী? মহানবী (সা.) তাঁর জীবনের শেষ হজ্জ্ব শেষে ফিরবার পথে ১৮ই জিলহজ্জ্ব তারিখে গাদীরে খুম নামক স্থানে থামলেন এবং সকল সাহাবীকে একত্র হবার নির্দেশ দিলেন। সেখানে তিনি ইমাম আলী (আ.)-কে সাথে নিয়ে মঞ্চে উঠে একটি সংক্ষিপ্ত ভাষণ দিলেন। এই ভাষণে মুসলিম উম্মাহর জন্য গুরুত্বপূর্ণ দিকনির্দেশনা ছিল। তার মাঝে প্রথমটি ছিল "কুরআন ও আহলে বাইতের" অনুসরণের আদেশ, এবং দ্বিতীয়টি ছিল "ইমাম আলী(আ.) এর অভিষেক", অর্থাৎ হযরত আলী (আ.) কে মুসলিম জাতির মওলা ঘোষণা করা। [মওলা শব্দের অনেক অর্থ হয়, যেমন মনিব, দাস, বন্ধু, অভিভাবক, শাসক ইত্যাদি।] "কুরআন ও আহলে বাইত" বিভিন্ন সহীহ সূত্রে বর্ণিত, হাদীসে সাকালাইন নামে পরিচিতি এই হাদীসের মূল কথাটি মোটামুটি এরকম: নবীজি (সা.) বললেন, "আমি তোমাদের মাঝে দুটি গুরুত্বপূর্ণ/ভারী/মূল্যবান বস্তু রেখে যাচ্ছি, আমি দেখব তোমরা এর সাথে কী আচরণ করো।" এরপর তিনি বললেন, "একটি হলো আ

বাংলাদেশ - সুইসাইড

বাংলাদেশে প্রতিবছর গড়ে ১০ হাজার মানুষ সুইসাইড করে। দশ হাজার!! এর মাঝে মেজরিটিই ইয়াং ছেলেমেয়ে। যে মানুষটা হারিয়ে গেল তো হারিয়েই গেল। দু'দিন দুঃখ প্রকাশ করে সবাই চলে যাচ্ছে। ইউরোপ আমেরিকার উন্নত দেশগুলোতে প্রচুর সুইসাইড হয়। বহুবছর তারা এর প্রতিরোধের ব্যবস্থা নেয়নি। "যে মারা গেল তো গেল, আমরাতো বেঁচে আছি, ফূর্তি করছি" -- এটা ছিল তাদের মেন্টালিটি। পরবর্তীতে যখন বছর বছর পরিসংখ্যান প্রকাশ হতে শুরু করলো, তখন দেখা গেল যে সমাজের সবচেয়ে প্রোডাক্টিভ শ্রেণী, ইয়াং জেনারেশানের মাঝে সুইসাইড রেট অস্বাভাবিক হারে বেড়ে যাচ্ছে, তখন তারা বিষয়টা আমলে নিলো। কেননা, এরাই ভোগ-বিলাসের এই পশ্চিমা দুনিয়াকে সচল রাখে। পৃথিবীর প্রতিটা দেশেই ইয়াং ছেলেমেয়ে সবচে বেশি আউটপুট দেয় সমাজ / রাষ্ট্রকে। এই কারণে পশ্চিমা বিশ্ব সতর্ক হয়েছে, সুইসাইড প্রিভেনশান সেন্টার খুলেছে; "আহারে, মানুষ তো!" -- এমন কোনো মানবিকতা থেকে নয়। পর্নোগ্রাফির মাফিয়ারা যেমন ইয়াং ছেলেমেয়েরা যেখানে জড়ো হয়, সেই জায়গায় গিয়ে হাজির হয়, তেমনি এখন সুইসাইড প্রিভেনশান সেন্টারগুলো ইয়াং ছেলেমেয়েদের পিছু নেয়ার মত করে তাদের সামনে হাজির হবা

ইসলাম -- কুরবানি, ইমামত

আল্লাহ তায়ালা ইব্রাহিম (আ.) এর বেশ কয়েকটি পরীক্ষা নেন, যার মাঝে "পুত্র ইসমাইল (আ.) কে কুরবানি" করার ঘটনাটিকে প্রতি বছর আমরা স্মরণ করি। এই কুরবানির ঈদ থেকে কেউ এমন শিক্ষা গ্রহণ করেন যে, "বনের পশুর পাশাপাশি সাথে মনের পশুকেও কুরবানি করতে হবে" -- অথচ যদিও ইব্রাহিম (আ.) এর জন্য এটা "মনের পশু কুরবানি" ছিল না। তবুও, এটাকে কেন্দ্র করে কেউ যদি প্রতি কুরবানির ঈদে আত্মশুদ্ধি ও আত্মত্যাগের শিক্ষা নিতে চায় তো সেটা অবশ্যই ভালো। আবার কেউ এমন শিক্ষাও গ্রহণ করতে পারেন যে, ইব্রাহিম (আ.) বনের প শুও নয়, মনের পশুও নয়, কুরবানি করেছিলেন মায়া। কেননা, ইব্রাহিম (আ.) ও ইসমাইল (আ.) -- দুইজনই ছিলেন নিষ্পাপ। পিতা-পুত্রের নিষ্পাপ বিশুদ্ধ ভালোবাসার এক মায়াময় সম্পর্ক ছিল তাঁদের মাঝে। সেই "প্রিয়বস্তুকে" ইব্রাহিম (আ.) কুরবানি করেছেন, তাহলে আল্লাহর পথে চলতে গিয়ে আমাদের প্রিয়বস্তু, প্রিয়ব্যক্তিদের যদি ছেড়ে যেতেও হয়, তবে যেন আমরা তা করতে পারি -- এটাই হয়ত কুরবানির শিক্ষা! আবার আরেকটি চিন্তা করার বিষয় এটাও হতে পারে যে, পরপর অনেকগুলি পরীক্ষায় ইব্রাহিম (আ.) উত্তীর্ণ হয়েছিলেন, পু

ইসলাম - মজলুম

ধর্ম নিয়ে বাড়াবাড়ি করা যুক্তিবিবর্জিত গোঁড়া মানুষদেরকে আনফলো দিতে দিতে নিউজ ফিড এখন প্রায় সেকুলার হয়ে গেছে। অথচ সেসব অন্ধবিশ্বাসী ধার্মিকদের সাথে আমরা একই দুঃখ শেয়ার করি। তাদের রক্তও লাল। এই মানুষদের থেকে দূরত্ব বজায় রাখা উত্তম, নতুবা গোঁড়ামি-অন্ধত্বের মোকাবিলা করতে গিয়ে আত্মিক প্রশান্তি ক্ষতিগ্রস্ত হয়। তবু তারা মানুষ, এবং যখন সে মজলুম, তখন আমি তার জন্যে দোয়া করি। এ আমার ধর্মের শিক্ষা। সেকুলার মানুষদের দোষগুলো এক্সপোজড, এবং আগে থেকেই জানা। তাদের সাথে তাই সহজে চলা যায়। কিন্তু তবুও, যখন খোদায় বিশ্বাসী কোনো মজলুম আর্তনাদ করে -- আল্লাহ! তখন আমি বলি, তুমি আমার ভাই। আমাদের ভাইয়ে ভাইয়ে দ্বন্দ্ব, সে আমি অস্বীকার করি না। তবু তুমি আমার ভাই। আমরা এক খোদার উপাসনা করি। আল্লাহ তোমাদেরকে জুলুম থেকে মুক্তি দিন। আল্লাহ তোমাদেরকে কামিয়াব করুন। তোমরা ভালো থেকো। আল্লাহর আরশের ছায়ায় দেখা হবে, ইনশাআল্লাহ।

এরদোয়ানের তুরস্ক: আবেগ বনাম বাস্তবতা

গত ১৫ই জুলাই তুরস্কে একটি “৬ ঘন্টার ব্যর্থ সেনা অভ্যুত্থান” ঘটে গেল। তার উত্তেজনায় আবেগাপ্লুত ধর্মপ্রেমী মানুষেরা নানান কথা লিখছেন অনলাইনে। ভোররাতে ফজর হবার আগেই সব মসজিদ থেকে আজান দিয়ে মানুষকে রাস্তায় নেমে আসতে বলা হয়েছে, আর এরদোয়ান সমর্থকেরা আল্লাহু আকবার শ্লোগান দিয়ে রাস্তায় নেমে এসেছেন, সেইসাথে এরদোয়ান মিডিয়াতে কান্না করেছেন -- ব্যস, আর কী লাগে! এতেই তা হয়ে গিয়েছে “ইসলামী বিপ্লব” এবং এরদোয়ান হয়েছেন “মহান ইসলামী খলিফা”। এরদোয়ান কে? তার বেড়ে ওঠা কিভাবে? রাজনীতিতে প্রবেশ কিভাবে? তার রাজনৈতিক জীবনের ইতিহাস কী? তার রাজনৈতিক গুরু নাজমুদ্দিন এরবাকানেই বা ইতিহাস কী? গুরুর ইসলামী দল ছেড়ে সেকুলার একেপি গঠন কেনইবা করলেন এরদোয়ান? শিষ্যের ব্যাপারে গুরুর মন্তব্য কী ছিল? সবচেয়ে বড় কথা, বিগত ১৪ বছরের শাসনামলে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এরদোয়ানের কর্মকাণ্ড কী ছিল? এরদোয়ানকে মহান মুসলিম নেতা বলার আগে এসবের উত্তর জানা থাকা দরকার। কিংবা তুরস্কের সেনা অভ্যুত্থান দমন দেখে ধর্মীয় আবেগে আপ্লুত হবার আগে এরদোয়ানের ইতিহাসটা একটু জানা দরকার। কেবল এরদোয়ানের ফজরের আজান দেয়া, আর নানান “ইসলামী কথা” শুনে

পিস টিভি, জাকির নায়েক ও এজিদ প্রসঙ্গ

সম্প্রতি গুলশান হামলার পরিপ্রেক্ষিতে ইন্ডিয়া ও বাংলাদেশে পিস টিভির সম্প্রচার বন্ধ করা হয়েছে। আমি তখন দিল্লীতে ছিলাম। দেশে ফিরে শুনি পিস টিভি ব্যান করা হয়েছে বাংলাদেশে, এবং তার আগে ইন্ডিয়াতে। আমার বাসায় টিভি নেই, এবং আমি জাকির নায়েকের লেকচার শুনিও না। কিংবা পিস টিভিতে যারা লেকচার দেন, বাংলা কিংবা ইংলিশ -- কোনোটাই শুনি না; প্রয়োজন হয় না। তাছাড়া আমার ইসলামের বুঝ জাকির নায়েকসহ পিস টিভি ও তার বক্তাদেরকে ইন জেনারেল আমার কাছে অগ্রহণযোগ্য করে তুলেছে। Peace TV বন্ধ হওয়ায় এদেশে বিকৃত ইসলাম প্রসারের গতি কমলো -- এটাই আমার মনে হয়েছে। একইসাথে আমি এটাও মনে করি যে, যেই অভিযোগ পিস টিভিকে ব্যান করা হয়েছে, তা নিছক অজুহাত। জাকির নায়েক কখনো জঙ্গীবাদকে উস্কে দিয়েছেন বলে আমার জানা নেই। কিংবা পিস টিভির লেকচার শুনে শুনে ISIS জঙ্গীরা সন্ত্রাসী হয়েছে -- এটা নিতান্তই হাস্যকর কথা। ISIS এর ধর্মতাত্ত্বিক বেইজ সম্পর্কে মোটেও ধারণা নেই, এমন লোকের পক্ষেই কেবল ISIS এর জন্য জাকির নায়েককে দোষ দেয়া সম্ভব। একইসাথে আমি এ বিষয়েও সচেতন যে, পিস টিভি বন্ধ করা হয়েছে আমাদের সরকারের রেগুলার “ইসলামবিরোধী কর্মকাণ্ডের অংশ

বাংলাদেশের রাজনীতি - জঙ্গী সমস্যা

গুলশানের রেস্টুরেন্টে সন্ত্রাসী হামলা শুরু হবার কিছুক্ষণের মধ্যেই সেটা ফেইসবুকের কল্যাণে জানতে পারলাম; সেই সময় থেকে এখন পর্যন্ত একটু পরপরই অনলাইনে চোখ রাখছি। ফেইসবুকে নানা বয়সের নানান ব্যাকগ্রাউন্ডের মানুষকে অ্যাড করা আছে, তাদের রিঅ্যাকশানগুলো দেখছি। এমনকি "সব মাদ্রাসা বন্ধ করা হোক মনিটর করা হোক" জাতীয় টিপিকাল কথা বলা নাস্তিকদের লেখালেখিও চোখে পড়লো। আমি হয়ত লিখতাম না, তবু কিছু কারণে দুটো কথা লিখতে বসেছি। আজকে দেশের যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, তা হুট করে হয়নি, এবং হুট করে বন্ধও হবে না। তবে আমরা যদি এখন থেকেই preventive measure নিতে পারি, তাহলে হয়ত দুই দশ বছর পর জাতি ঘুরে দাঁড়াবে, আমাদের নেক্সট জেনারেশান অন্ততঃ নিরাপদে থাকতে পারবে। আমি জানি আমার এই লেখা দুই দশজন মানুষ ছাড়া আর কারো কাছে পৌঁছাবে না এবং আমার এই দুটো কথায় দেশ বদলে যাবে না। তবুও লিখছি, কারণ কর্তব্য অনুভব করছি। আমাদের গাফিলতির কারণেই যে দেশ আজকে এই অবস্থায় এসে দাঁড়িয়েছে, তা কি আমরা স্বীকার করি? না অনুধাবন করতে পারি? আজকে তরুণ সমাজ জানে না, এই হামলার দায় স্বীকার করা ISIS কী? ISIS এর উৎপত্তি কোথা থেকে? কারা এর প