সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

বাংলাদেশের রাজনীতি - জঙ্গী সমস্যা

গুলশানের রেস্টুরেন্টে সন্ত্রাসী হামলা শুরু হবার কিছুক্ষণের মধ্যেই সেটা ফেইসবুকের কল্যাণে জানতে পারলাম; সেই সময় থেকে এখন পর্যন্ত একটু পরপরই অনলাইনে চোখ রাখছি। ফেইসবুকে নানা বয়সের নানান ব্যাকগ্রাউন্ডের মানুষকে অ্যাড করা আছে, তাদের রিঅ্যাকশানগুলো দেখছি। এমনকি "সব মাদ্রাসা বন্ধ করা হোক মনিটর করা হোক" জাতীয় টিপিকাল কথা বলা নাস্তিকদের লেখালেখিও চোখে পড়লো।
আমি হয়ত লিখতাম না, তবু কিছু কারণে দুটো কথা লিখতে বসেছি।
আজকে দেশের যে পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, তা হুট করে হয়নি, এবং হুট করে বন্ধও হবে না। তবে আমরা যদি এখন থেকেই preventive measure নিতে পারি, তাহলে হয়ত দুই দশ বছর পর জাতি ঘুরে দাঁড়াবে, আমাদের নেক্সট জেনারেশান অন্ততঃ নিরাপদে থাকতে পারবে।
আমি জানি আমার এই লেখা দুই দশজন মানুষ ছাড়া আর কারো কাছে পৌঁছাবে না এবং আমার এই দুটো কথায় দেশ বদলে যাবে না। তবুও লিখছি, কারণ কর্তব্য অনুভব করছি।
আমাদের গাফিলতির কারণেই যে দেশ আজকে এই অবস্থায় এসে দাঁড়িয়েছে, তা কি আমরা স্বীকার করি? না অনুধাবন করতে পারি?
আজকে তরুণ সমাজ জানে না, এই হামলার দায় স্বীকার করা ISIS কী? ISIS এর উৎপত্তি কোথা থেকে? কারা এর পিছনে আছে? এদের ধর্মীয় দর্শন কী? সেই দর্শনের ইতিহাস কী?
তরুণ সমাজ যখন এগুলো জানে না, তখন তারা এই আন্তর্জাতিক সন্ত্রাসী গোষ্ঠীটিকে দিয়ে দুনিয়াব্যাপী কী খেলা খেলা হচ্ছে, কেমন সেই খেলা এবং সেই খেলা বাংলাদেশের কনটেক্সট-এ সম্ভাব্য কী রূপ নিতে পারে -- তাও অনুমান করতে পারবে না। ISIS game বাংলাদেশে আগামী দুই দশ বছরে কেমন হবে, তা যদি আমরা আগে থেকে অনুমান করতে না পারি, তাহলে আমরা কিভাবে সেটাকে প্রিভেন্ট করব?
অথচ তরুণ সমাজ ডিসট্র্যাক্টেড হয়ে আছে নানান খেলা, গান, মুভি, গেইম আর এই রোজার মাসে "ইফতার উইথ হিম / হার" নিয়ে। সমাজের সকল স্তরের মানুষের জন্যই ডিসট্র্যাকশানের ব্যবস্থা করে রাখা হয়েছে। এমনকি রিকশাঅলার জন্য তার উপযোগী করে gross অশ্লীল বাংলা মুভির ব্যবস্থা করা হয়েছে। সমাজের ধনী শ্রেণীর তরুণেরা দামী হোটেল, খাওয়া দাওয়া ফূর্তিতে মগ্ন। মধ্যবিত্ত শ্রেণীর তরুণের আড্ডাবাজিতে ব্যস্ত। গোটা জাতি জাতিগত নেশা ক্রিকেট, ফুটবল ইত্যাদিতে ব্যস্ত। মেয়েদের জন্য ডিসট্র্যাকশনের ব্যবস্থা আছে হিন্দি সিরিয়াল, কোরিয়ান সিরিয়াল এবং আরো নানা সাজগোজ রান্নাবান্না এটা সেটা দিয়ে। ছোট বাচ্চাদেরকে ব্যস্ত রাখা হয়েছে ডোরেমন দিয়ে।
হ্যাঁ, গোটা জাতির সকল শ্রেণীর সকল স্তরের মানুষের জন্য নানারকম ডিসট্র্যাকশানের ব্যবস্থা করে রাখা হয়েছে। অতএব, গুলশানের রেস্টুরেন্টে কেউ মরবে কিনা, মরলে কতজন মরবে, বাঁচানো যাবে কিনা, হবে কিনা, বাঁচানো গেলে কতজনকে বাঁচানো যাবে -- এসব সিদ্ধান্ত শয়তানেরা নিচ্ছে।
আজকে বেলা বারোটায় ঘুম থেকে ওঠা তরুণ ছেলেটা যখন গুলশানের ঘটনার কথা শুনছে, আঁতকে উঠে বলছে, কেম্নে কি, আমিতো কিছুই জানি না!
কিংবা ক্ল্যাশ অব ক্ল্যানস থেলতে থাকা ছেলেটা যখন ফেইসবুকে ঢুকে দেখছে সবাই হ্যাশট্যাগ দিচ্ছে, ‪#‎PrayForDhaka‬ , তখন সে-ও ঐ একটা হ্যাশট্যাগ দিয়ে দায়িত্ব সারছে।
আজকের ইউনিভার্সিটি পড়ুয়া তরুণ ছেলেমেয়েরা ঘটনা ঘটে যাবার পর কেউ কেউ স্ট্যাটাস দেয়, হ্যাশট্যাগ দেয়।
আর আজকে থেকে অর্ধশত বছর আগের এদেশেরই ইউনিভার্সিটির ছাত্ররা কী করেছিল? তারা ঘটনা ঘটে যাবার বহু আগেই বুঝতে পেরেছিলো, বাংলা ভাষা হারিয়ে গেলে আমরা আমাদের কালচার হারিয়ে ফেলব, বাঙালি জাতিসত্ত্বা হারিয়ে ফেলব, বাংলা ভাষাই আমাদের মাটি মা মানুষ আর ধর্মকে ধারণ করে রেখেছে -- অতএব ভিনদেশী ভাষা চাপিয়ে দেয়ার ষড়যন্ত্র বাস্তবায়ন হতে দেয়া যাবে না -- তাই হয়েছিল ভাষা আন্দোলন। এমনি এমনিতো আর হয়নি! সেসময়ের ঢাকা ইউনিভার্সিটির ছাত্ররা সত্যিকারের "বিশ্ববিদ্যালয়ের" ছাত্র ছিল। সেই ভাষাসৈনিক ভাষাশহীদেরা উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করার সুদূরপ্রসারী খারাপ প্রভাবটি মুহুর্তেই চোখে দেখতে পেতেন, দেখতে পেয়েছিলেন। তাই রক্ত দিয়ে সেটা ঠেকানোর চেষ্টা করেছিলেন।
কিন্তু আজকের তরুণ সমাজ? ইউনিভার্সিটি পড়ুয়া ছেলেমেয়েরা? অনেকে তো ভেসে গেছেই, আর যারাও বা একটু সচেতন, তারা ঘটনা ঘটে যাবার পর সচেতন হয়েছে -- বলছে, বাচ্চারা হিন্দি বলছে ডোরেমন দেখে, হিন্দি সিরিয়ালের মাধ্যমে দেশে কূটনামি ঢুকছে, খারাপ কালচার ঢুকছে, ব্লা ব্লা ব্লা। চোর পালানোর পর বুদ্ধি বাড়বে, এ-ই কি "বিশ্ববিদ্যালয়ের" "ছাত্র", হ্যাঁ? অথচ এই তরুণ ছেলেমেয়েরাই আজ থেকে ১৫-২০ বছর আগে থেকে শাহরুখ খান, সালমান খান, আমির খানসহ নানান খানের ভক্ত হয়ে গিয়েছে, "বিনোদন তো করতেই হবে" ইত্যাদি অজুহাতে হিন্দি মুভি ইংলিশ মুভি দেখে ধীরে ধীরে cultural aggression এর সূত্র সৃষ্টি করেছে, শয়তানকে সুযোগ করে দিয়েছে। আজকে একটা পিচ্চিকে ডাক দিলে হিন্দিতে জবাব দিলে তখন গা জ্বালা করে আর কী লাভ?
আই হেইট পলিটিক্স জাতীয় কথা বলে, এমন তরুণের সংখ্যাও তো কম নয়। পলিটিক্স যদি বুদ্ধিমান, ভালো তরুণেরা নিয়ন্ত্রণ না করে, তবেতো তা শয়তানেরা নিয়ন্ত্রণ করবেই!
আমাদের কালচার কেমন হবে, কেমন হওয়া উচিত, সেই বিষয়ে যদি ইউনিভার্সিটি পড়ুয়া তরুণদের কোনো চিন্তা না থাকে, তবে সেই পলিসি তো ভিনদেশীরা make করবেই!
আমাদের ধর্ম কেমন হবে, আমাদের ধর্মের গোড়া কি, খাঁটি মুহাম্মদী ধর্ম কেমন, তা নিয়ে যদি ইউনিভার্সিটিগুলোতে মুক্ত আলোচনা না হয়, তবেতো আমরা উগ্র ব্রিটিশ-মেইড শিয়া হবোই, আমেরিকা মেইড জঙ্গী সুন্নী হবোই, সৌদি মেইড রুক্ষ সালাফি হবোই, তবেতো আমরা ইসলামের মোড়কে আমেরিকা-ইসরাইল-সৌদি-তুরস্কের সৃষ্ট ISIS কে ইসলামিক ভাববোই! এবং তেমনটাই হয়েছে! দুই বছর আগে আমি আমার অনার্সের ইউনিভার্সিটিতে থাকাকালীন এমন মানুষকে দেখেছি, যে সরাসরি ISIS এর সমর্থক, সে ISIS-কে খাঁটি ইসলামিক মনে করে! ইফতার পার্টিতে উপস্থিত হয়ে যখন দেখি খাঁটি ISIS সমর্থক লোকটি সেখানে উপস্থিত, তখন জানের ভয় নিয়ে ইফতার করে চলে এসেছিলাম!
ইউনিভার্সিটির তরুণ শিক্ষিত ছেলেমেয়েরা, যাদের access to information আছে, তারা যদি সেটা কাজে না লাগায়, তারা যদি সমাজ-রাজনীতি-ধর্ম সচেতন না হয়, তবেতো ঘটনা ঘটে যাবার পর হ্যাশট্যাগ দিবেই - #PrayForDhaka !
...................................
জেগে উঠতে হবে, মানুষকে জেগে উঠতে হবে। আর সেটা না বৃদ্ধরা পারবে, আর না শিশুরা তার উপযুক্ত। সেটা তরুণ সমাজকেই করতে হবে, এবং এই ইউনিভার্সিটি পড়ুয়া ছেলেমেয়েরাই সেটা করতে পারবে। ২০-২৫ এর একটা ছেলের সচেতন হওয়াই তার গোটা পরিবারের সচেতন হওয়ার জন্য যথেষ্ট। ২০-২৫ এর একটা ছেলে সচেতন হওয়া মানেই বৃদ্ধ দুজন পিতা-মাতার সচেতন হওয়া, ছোট দুটো ভাই-বোনের সচেতন হওয়া। এই জাতিকেতো গাফিলতি-ডিসট্র্যাকশান-বিস্মৃতির মাঝে ডুবিয়ে রাখা হয়েছে যুগযুগ ধরে। কিন্তু সেটা মুহুর্তেই বদলে যেতে পারে তরুণ ছেলেমেয়েদের মাধ্যমে। প্রতিটা ফ্যামিলিতে সচেতনতার আলো নিয়ে একটা করে তরুণ ছেলে/মেয়ে প্রবেশ করলেই এই দেশের চিত্র বদলে যাবে। দেখা যাবে, তখন এই তরুণেরাই আর "বিডিআর বিদ্রোহ" না বলে "বিডিআর হত্যাকাণ্ড" বলছে, কারণ তখন তারা বুঝবে যে আমাদের আজকের ব্যবহৃত শব্দ আগামী দিনের তথ্য-প্রমাণ হিসেবে ব্যবহৃত হবে।
অবশ্যই এটা সম্ভব। কেন সম্ভব নয়? সচেতন তরুণ সমাজের দেশে না স্বৈরাচারী জুলুমবাজ তাঁবেদার সরকার চেপে বসতে পারে, আর না চেপে বসলে দীর্ঘদিন টিকতে পারে। তরুণ দেহে রক্তের যে তেজ, কোনো স্বৈরাচারীও সে আগুনে টিকতে পারবে না। আর তরুণ হৃদয়ের ভালোবাসার যে শক্তি, সত্যিকারের কোনো আলেমের হাত ধরে শান্তির নেতৃত্ব আসলে সেই নেতৃত্বকে, সেই সার্বভৌমত্বকে তারা হৃদয়ের রক্ত দিয়ে এমনভাবেই রক্ষা করবে যে আমেরিকা-ইসরাইল কোনো শক্তিই সেই ভালোবাসার দেয়াল ভেঙে জাতিকে ক্ষতিগ্রস্ত করতে পারবে না। কে বলেছে সম্ভব নয়?
"বন্ধু-আড্ডা-গান", বয়ফ্রেন্ড-গার্লফ্রেন্ড, মুভি, গেইমস, ক্রিকেট ফুটবল আর শতরকমের ডিসট্র্যাকশান দিয়ে যদি এতদিন ধরে তরুণ দেহের রক্ত আর হৃদয়ের ভালোবাসাগুলিকে ঘুম পাড়িয়ে রাখা হয়, তবে এখনই সময় সেটাকে জাগিয়ে তোলার। ইউনিভার্সিটি পড়ুয়া তরুণেরাই তখন বিস্ময়কর বিপ্লবের নায়ক হয়ে উঠবে। তারা ফিলোসফার হবে, থিয়োলজিয়ান হবে, সোশাল সায়েন্টিস্ট হবে, পলিটিকাল অ্যানালিস্ট হবে, স্ট্র্যাটেজি মেকার হবে -- সব, সবকিছু তারাই হবে। নিশ্চয়ই পরিবর্তন তখন আসবে। দেশের নিরাপত্তা কেবল তেমন নেতৃত্বের হাতেই নিশ্চিন্ত হবে। তখন আর ৫৭ জন অফিসারকে হারিয়ে কাঁদতে হবে না, কেননা তরুণ হৃদয় কখনোই এতটা নির্মম হতে পারে না। তখন আর ২০ জন বিদেশীর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে ISIS গেইমের আশঙ্কা করতে হবে না। তখন আর আমাদের জুমার খুতবাগুলো অকার্যকর থাকবে না, বরং ৫২ সপ্তাহের ৫২টা খুতবায় তরুণ ছেলেরাই জাতিকে জানিয়ে দিবে ISIS এর গোড়া কোথায়, ওহাবী রুক্ষ ইসলামের ইতিহাস কী, আমেরিকান ইসলাম ব্রিটিশ ইসলাম কী, শিয়া-সুন্নি দ্বন্দ্ব উসকে দিয়ে কারা লাভবান হতে চায়।
কেন সম্ভব নয়? এতদিন যদি আমরা ঘুমিয়ে থাকি, আজকে একটা ঝাঁকি দিয়ে জেগে ওঠা কেন সম্ভব নয়? অবশ্যই সম্ভব। তরুণ দেহ, তরুণ হৃদয় যদি সে ঝাঁকি দিতে না পারে, তবে দুনিয়ার আর কেউ পারবে না। হয়ত দেশটা আগামী দশ বছরে আরো খারাপের দিকে যাবে। কিন্তু আপনি আজকে একটা ঝাঁকি দিয়ে ঘোর ভেঙে জেগে উঠুন, উঠে দাঁড়ান, বদলে যান, দেখবেন ঠিকই দশ বছর পর গোটা জাতির মোড় আপনিই সঠিক দিকে নিয়ে যাচ্ছেন। শুধু আপনি একা বদলালে কী লাভ? উঁহু। আপনি একা বদলাবেন, এবং এভাবে প্রত্যেকটা "একা" মানুষই বদলে যাক, তারপর দেখবেন সব "একা" মানুষ মিলে একটা শক্তিশালী সমাজ হয়ে গিয়েছে। তরুণ সমাজ কেন বোঝে না? তাদের কত ক্ষমতা, তাদের কত শক্তি? তাদের বুদ্ধিমত্তার প্রাখর্য, তাদের ভালোবাসার ব্যাপকতা, তাদের হৃদয়ের উষ্ণতা?
মানুষ জেগে উঠকু, মানুষ জেগে উঠুক।
নূরে আলম
জুলাই ২, ২০১৬।

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

টাকার ইতিহাস, মানি মেকানিজম ও ব্যাঙ্কিং সিস্টেমের মহা জুলুম

ভূমিকা: জালিমের বিরুদ্ধে বুদ্ধিবৃত্তিক সংগ্রাম  (মহররম: ইনফো সিরিজ এর শেষ পোস্ট ছিল এটা। মূল সিরিজটি পড়ে আসুন ) জুলুমের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের মাস হলো মহররম মাস। জালিমের মুখোশ উন্মোচনের মাস মহররম। জুলুমের কূটকৌশল উন্মোচনের মাস মহররম। আধুনিক সেকুলার গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় লেজিসলেশান (সংসদ), আর্মড ফোর্সেস (আর্মি) ও জুডিশিয়ারি (আদালত) হলো এক মহা জুলুমের ছদ্মবেশী তিন যন্ত্র, যারা পরস্পর পরস্পরকে সাহায্য করে জুলুম টিকিয়ে রাখার জন্য। তারচেয়েও বড় জালিম হলো big corporations: বড় বড় মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি, যারা তাবৎ দুনিয়াকে দাস বানিয়ে রেখেছে। আর এই দাসত্বের শৃঙ্খলে তারা আমাদেরকে আবদ্ধ করেছে ব্যাঙ্কিং সিস্টেমের মাধ্যমে: টাকা আমাদের শ্রমকে ধারণ করে, অথচ সেই টাকার মূল্য আপ-ডাউন করায় অন্যরা -- ব্যাংক ব্যবসায়ীরা! টাকা আমাদের শ্রমকে সঞ্চয় করার মাধ্যম, অথচ সেই টাকা আমরা প্রিন্ট করি না, প্রিন্ট করে (ব্যাংকের আড়ালে) কিছু ব্যবসায়ী! সেই টাকার মান কমে যাওয়া (বা বেড়ে যাওয়া) আমরা নির্ধারণ করি না -- নির্ধারণ করে ব্যাঙ্ক (ব্যবসায়ীরা)! ইমাম হুসাইনের (আ.) প্রতিবাদী চেতনাকে ধারণ করব, শোকাহত হ

ধর্মব্যবসা: মুসলমানদের হাতে ইসলাম ধ্বংসের অতীত-বর্তমান (১)

ভূমিকা যদিও পলিটিকাল-রিলিজিয়াস ইস্যুতে নিশ্ছিদ্র আর্গুমেন্ট উপস্থাপন করে আলোচনা করার অভ্যাস আমার, কিন্তু এখানে বিস্তারিত ইতিহাস তুলে ধরে আর্গুমেন্ট করার প্রথমতঃ ইচ্ছা নেই, দ্বিতীয়তঃ সময় ও সুযোগ নেই। আমি যা সত্য বলে জানি, তা সংক্ষেপে তুলে ধরছি। যারা আমার উপর আস্থা রাখেন তাদের জন্য এই লেখাটি সোর্স অব ইনফরমেশান, উন্মুক্ত হৃদয়ের মানুষদের জন্য সত্য অনুসন্ধানের নতুন কিছু টপিক, আর প্রেজুডিসড ধর্মান্ধ রোগগ্রস্ত অন্তরের জন্য রোগ বৃদ্ধির উছিলা। শেষ পর্যন্ত আর্গুমেন্ট ও ডায়লগের দুয়ার উন্মুক্ত রাখার পক্ষপাতী আমি, কিন্তু সেই আর্গুমেন্ট অবশ্যই সত্য উন্মোচনের নিয়তে হওয়া উচিত, নিজের দীর্ঘদিনের লালিত বিশ্বাস ও ধ্যান ধারণাকে প্রতিষ্ঠা করবার উদ্দেশ্যে নয়। মক্কা-মদীনা: মুহাম্মদ (সা.) থেকে আলে-সৌদ (৬২৯-১৯২৪) এদেশের অধিকাংশ মানুষ মক্কা-মদীনার ইতিহাস কেবল এতটুকু জানেন যে, মুহাম্মদ (সা.) মদীনায় ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেন এবং পরবর্তীতে বিনা রক্তপাতে মক্কা বিজয় করেন। কিন্তু প্রায় চৌদ্দশ’ বছর আগে মুহাম্মদ (সা.) এর প্রতিষ্ঠিত ইসলামী রাষ্ট্র থেকে আজকের রাজতান্ত্রিক সৌদি আরবের ইতিহাস কম মানুষই জানেন। প

পিস টিভি, জাকির নায়েক ও এজিদ প্রসঙ্গ

সম্প্রতি গুলশান হামলার পরিপ্রেক্ষিতে ইন্ডিয়া ও বাংলাদেশে পিস টিভির সম্প্রচার বন্ধ করা হয়েছে। আমি তখন দিল্লীতে ছিলাম। দেশে ফিরে শুনি পিস টিভি ব্যান করা হয়েছে বাংলাদেশে, এবং তার আগে ইন্ডিয়াতে। আমার বাসায় টিভি নেই, এবং আমি জাকির নায়েকের লেকচার শুনিও না। কিংবা পিস টিভিতে যারা লেকচার দেন, বাংলা কিংবা ইংলিশ -- কোনোটাই শুনি না; প্রয়োজন হয় না। তাছাড়া আমার ইসলামের বুঝ জাকির নায়েকসহ পিস টিভি ও তার বক্তাদেরকে ইন জেনারেল আমার কাছে অগ্রহণযোগ্য করে তুলেছে। Peace TV বন্ধ হওয়ায় এদেশে বিকৃত ইসলাম প্রসারের গতি কমলো -- এটাই আমার মনে হয়েছে। একইসাথে আমি এটাও মনে করি যে, যেই অভিযোগ পিস টিভিকে ব্যান করা হয়েছে, তা নিছক অজুহাত। জাকির নায়েক কখনো জঙ্গীবাদকে উস্কে দিয়েছেন বলে আমার জানা নেই। কিংবা পিস টিভির লেকচার শুনে শুনে ISIS জঙ্গীরা সন্ত্রাসী হয়েছে -- এটা নিতান্তই হাস্যকর কথা। ISIS এর ধর্মতাত্ত্বিক বেইজ সম্পর্কে মোটেও ধারণা নেই, এমন লোকের পক্ষেই কেবল ISIS এর জন্য জাকির নায়েককে দোষ দেয়া সম্ভব। একইসাথে আমি এ বিষয়েও সচেতন যে, পিস টিভি বন্ধ করা হয়েছে আমাদের সরকারের রেগুলার “ইসলামবিরোধী কর্মকাণ্ডের অংশ