শাহবাগ ইস্যুতে বাংলাদেশী নাস্তিকরা মোটামুটি ফোকাসে এসেছিলো। কিন্তু ইনফরমেশানের যুগে প্রচুর মানুষ ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিজমের প্র্যাকটিস করছে। (আর সংবাদ জগত বলতে পরিচিত জায়গাগুলোতে মূর্খ অযোগ্য লোকেরা বসে বিভিন্ন দল-মতের পক্ষে চোখ বুঁজে প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছে আর ভাবছে, তারা জিতে গেছে! কিন্তু মানুষ যে প্রথম আলোকে হলুদ আলো, ইত্যাদি বলছে বা অন্যান্য দল-মতের প্রচারযন্ত্রেরও মিথ্যাচার নানাভাবে ধরা পড়ে যাচ্ছে, তা তারা দেখলেও বুঝতে পারছে না। কাপড় গেছে খুলে, মুখোশ গেছে উন্মোচন হয়ে, তবু শেষ পর্যন্ত সত্য-মিথ্যা মিলিয়ে মিশিয়ে প্রচার করে যেতেই হবে!)
তো যা বলছিলাম। এখনকার "সাংবাদিক" নামধারীরা হয়ে গেছে শুদ্ধভাষায় মিথ্যা লেখার চাকুরিজীবি।
অপরদিকে গুগল-ফেইসবুক-ইউটিউবে-স্মার্টফোনের কল্যাণে অনেক অ-সাংবাদিক সাধারণ মানুষ হয়ে উঠছেন ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিস্ট; হয়ত ভাষাগত যোগ্যতা কম, কিন্তু সত্য বের করে আনার কারণে তারা অনেক শক্তিশালী হয়ে উঠছেন। ফেইসবুকে এমন অনেক individual এর দেখা পাওয়া যায়।
তো যা বলছিলাম। এখনকার "সাংবাদিক" নামধারীরা হয়ে গেছে শুদ্ধভাষায় মিথ্যা লেখার চাকুরিজীবি।
অপরদিকে গুগল-ফেইসবুক-ইউটিউবে-স্মার্টফোনের কল্যাণে অনেক অ-সাংবাদিক সাধারণ মানুষ হয়ে উঠছেন ইনভেস্টিগেটিভ জার্নালিস্ট; হয়ত ভাষাগত যোগ্যতা কম, কিন্তু সত্য বের করে আনার কারণে তারা অনেক শক্তিশালী হয়ে উঠছেন। ফেইসবুকে এমন অনেক individual এর দেখা পাওয়া যায়।
তো, বাংলাদেশে নাস্তিকদের পদচারণা মূলতঃ মধ্যবিত্ত থেকে উচ্চবিত্ত শিক্ষিত সমাজে। (কারণ নাস্তিকতা এমনই এক জিনিস যে, মুসলমান-হিন্দু-খ্রিষ্টান ইত্যাদি লোকদের খোদাকে মিথ্যা প্রমাণ করতে হলে তাদের প্রচুর পড়তে হয়, প্রচুর কপি-পেস্ট করতে হয়, তা না হলে তারা নাস্তিক হতে পারে না! অর্থাৎ আপনি ইংরেজি পড়তে জানেন না? রিচার্ড ডকিন্সের ভিডিও শুনে বুঝতে পারেন না? কিংবা মুক্তমনা ওয়েবসাইটের সন্ধান জানেন না? তাহলে আপনি আর নাস্তিক হতে পারবেন না নিজে থেকে, বেচারা আপনি ধার্মিক হয়েই থাকবেন! (কেননা নাস্তিকতার যুক্তিগুলোতো কোনো স্বতঃস্ফূর্ত জ্ঞান নয়। এগুলো শয়তানের শিখিয়ে দেওয়া বুলি, নানান বই পড়ে, কপি-পেস্ট করে, মুখস্থ করে, ভিডিও দেখে তারপর নাস্তিকতার যুক্তি আহরণ করতে হয়!) )
২০০৫-০৭ সাল থেকে ইন্টারনেটে ব্যাপকভাবে বাংলায় নাস্তিক্যবাদী ম্যাটেরিয়ালস ইমপোর্ট শুরু হলো। বিদেশী ফান্ডিঙে প্রচুর বই-আর্টিকেল অনুবাদ হলো, হিউজ এক একটা বই, আর্টিকেল। এত কোটি কোটি টাকা ব্যয় করার পর অল্প কিছু ছেলেপেলেকে নাস্তিক বানানো গেলো। পরে শাহবাগ ইস্যু আসার পর মাহমুদুর রহমান এদের নোংরা চরিত্র উন্মোচন করলেন, ফলে এদের অগ্রযাত্রায় কিছুটা ভাঁটা পড়লো।
(আমার এক বোনের সিনিয়র এক হিজাবী আপুকে তারই জুনিয়র বুয়েটেরই এক ছাত্র নাকি অফিসে দুইদিন পরপর এসে এক একটা নতুন নাস্তিক্যবাদী যুক্তি শুনিয়ে যেত। (যদ্দুর মনে পড়ে মেবি একসাথে এক অফিসে জব করত)। তো, একদিন সেই আপুকে নতুন কী যেন বলতে এসেছে, তখন উনি বললেন: কী, এইমাত্র বই থেকে পড়ে এলি? :P বেচারা তখন মুখ চুন করে চলে গেছে আর কথা বলে না!)
তবে নাস্তিক পরিচয় ধারণকারীদের এক দুর্ভাগ্য আজীবন থাকবে। তাদেরকে মানুষ শুধু নাস্তিক বলে না। বলে "হিন্দু নাস্তিক, মুসলিম নাস্তিক" এভাবে। :D কারণ তাদের নামগুলো তো ধর্মীয় পরিচয়েরই র'য়ে যায়! :P
(কেবলমাত্র ধর্মনিরপেক্ষ নাম হতে পারে বিভিন্ন সংখ্যা দিয়ে। তারা তাদের হিন্দু বা মুসলিম নাম ত্যাগ করে নিজেদের নাম রাখতে পারে 3310, 1100 এইরকম বিভিন্ন ডিজিট। কারণ এতে ধর্মের কোনো নামগন্ধ নেই। কিংবা পশুপাখির নামে, যেমন: কোকিল, কুকুর, বিড়াল, সাপ, বেজি...। :P)
(কেবলমাত্র ধর্মনিরপেক্ষ নাম হতে পারে বিভিন্ন সংখ্যা দিয়ে। তারা তাদের হিন্দু বা মুসলিম নাম ত্যাগ করে নিজেদের নাম রাখতে পারে 3310, 1100 এইরকম বিভিন্ন ডিজিট। কারণ এতে ধর্মের কোনো নামগন্ধ নেই। কিংবা পশুপাখির নামে, যেমন: কোকিল, কুকুর, বিড়াল, সাপ, বেজি...। :P)
..........................................................................
কিন্তু আমরা মেজরিটি মুসলমানরা কোটি কোটি মুসলমানের মাঝে থাকার কারণে বেশ রিলাক্স ফিল করি, এবং আমরা প্রত্যেকে ব্যক্তিগতভাবে আমাদের ধর্ম সম্পর্কে জানাশোনা না হলেও এই মেজরিটির শক্তিতেই বেশ একটা নিশ্চিন্ত অনুভব করি: আরে নাস্তিকদের মোকাবিলা করার জন্যতো জাকির নায়েক আছেই, কিংবা ওমুক ভাইতো আছেই, উনি ধর্ম সম্পর্কে অনেক জানে, নাস্তিকদের ধুয়ে দেবে, ইত্যাদি ইত্যাদি।
কিন্তু কখনো চিন্তা করে দেখেছেন, how would it be if it was the other way round? যদি নাস্তিকরা মেজরিটি হতো আর আমরা মাত্র কয়েকশো বা হাজারখানে মুসলিম হতাম? তখন সম্ভবতঃ আমরা প্রত্যেকেই ঐ নাস্তিকদের মত ব্যাপক পড়াশুনা করতাম নিজেদের ধর্ম নিয়ে, ইসলাম নিয়ে। পশ্চিমা বিশ্বে এটা অনেক দেখা যায়। এখানে মুসলিম মানেই তার বেশকিছু বিষয়ে পড়াশুনা করা আছে, বিশেষতঃ তার ফেইথকে ডিফেন্ড করার মত, নাস্তিকদের যুক্তি খণ্ডন করার মত বেশকিছু যুক্তি তার জানা আছে। পশ্চিমে যেহেতু মুসলমানরা মাইনরিটি, সেহেতু তাদের মাঝে এটা ঘটছে। এটাতো অবশ্যই ভালো, তাই না? আর আমরা যে পড়াশুনা করছি না, এটা যে ভালো নয়, তা-ও তো আমরা বুঝি, তাই না?
ইউরোপ আমেরিকায় নতুন ইসলাম গ্রহণ করা একটা মানুষ যেমন অসহায় অনুভব করে, একাকীত্ব অনুভব করে, সোশাল প্রেশার অনুভব করে, এবং নিজের new-found-faith ইসলাম সম্পর্কে বারবার প্রশ্ন ও বিরোধিতার সম্মুখীন হয়, বাংলাদেশে ঠিক তেমনটা হয় নব্য নাস্তিকেরা। তাদেরকে হাজারটা মুসলমানের মুখোমুখি হতে হবে, এবং চান্স আছে যে, কোনো এক মুসলমানের উচ্চস্তরের যুক্তির কাছে সে হেরে যাবে।
তেমনি অবস্থা পশ্চিমা বিশ্বের নও-মুসলমিদের। ইসলাম গ্রহণ করার সাথে সাথেই তারা জিহাদ, ইসলামের শাস্তির বিধান, চার স্ত্রী রাখার বিধান, ইত্যাদি বিষয়ে পণ্ডিত হয়ে যায় না। আর এগুলো নিয়েই তাদেরকে চেপে ধরে ইসলামবিরোধীরা। ফলস্বরুপ, নিজের identity বা পরিচয় রক্ষা করতে গিয়েই তারা পড়াশুনা শুরু করে।
তেমনি অবস্থা পশ্চিমা বিশ্বের নও-মুসলমিদের। ইসলাম গ্রহণ করার সাথে সাথেই তারা জিহাদ, ইসলামের শাস্তির বিধান, চার স্ত্রী রাখার বিধান, ইত্যাদি বিষয়ে পণ্ডিত হয়ে যায় না। আর এগুলো নিয়েই তাদেরকে চেপে ধরে ইসলামবিরোধীরা। ফলস্বরুপ, নিজের identity বা পরিচয় রক্ষা করতে গিয়েই তারা পড়াশুনা শুরু করে।
আমাদের দেশের নাস্তিকরাও তেমনি প্রচুর পড়াশুনা করে। কিন্তু আফসোস এই যে, they are on the wrong side, এবং অধিকাংশ ক্ষেত্রেই নাস্তিক্যবাদ গ্রহণ করে তারা দুইটা কারণে, creationist Kent Hovind যেটা চমৎকারভাবে বলেছিলেন:
"I think most people cannot find God for the same reason a theif cannot find a policeman."
(আমি মনে করি অধিকাংশ মানুষ স্রষ্টাকে খুঁজে পায় না সেই একই কারণে, যে কারণে চোর খুঁজে পায় না পুলিশকে।)
"They are atheists not because of science, but because if their sins."
("তারা নাস্তিক হয়েছে বিজ্ঞানের কারণে নয়, বরং তাদের পাপের কারণে।" অর্থাৎ, পাপকে জাস্টিফাই করার জন্য নাস্তিকতার ব্যানারের নিচে ঢুকেছে।)
"I think most people cannot find God for the same reason a theif cannot find a policeman."
(আমি মনে করি অধিকাংশ মানুষ স্রষ্টাকে খুঁজে পায় না সেই একই কারণে, যে কারণে চোর খুঁজে পায় না পুলিশকে।)
"They are atheists not because of science, but because if their sins."
("তারা নাস্তিক হয়েছে বিজ্ঞানের কারণে নয়, বরং তাদের পাপের কারণে।" অর্থাৎ, পাপকে জাস্টিফাই করার জন্য নাস্তিকতার ব্যানারের নিচে ঢুকেছে।)
...................................
আমরা মুসলমানরা বেশ রিলাক্সে থেকে নাস্তিকদের গালমন্দ করি, তাদের নিয়ে উপহাস করি। কিন্তু একটু গভীর গেলেই দেখা যাবে, যে ছেলেটা নাস্তিক হয়েছে, তার পরিবার থেকে উপযুক্ত ধর্মীয় শিক্ষার অভাব ছিল। পরিবার তাকে স্ট্রং ধর্মীয় আইডেন্টিটি দিতে পারে নাই। তাই আস্তিকতা-নাস্তিকতার দ্বন্দ্বের সম্মুখীন যখন সে হলো (স্কুল-কলেজ-ইউনিভার্সিটিতে), তখন সে দৃঢ় দলের আশ্রয় গ্রহণ করলো। আর সেই অপেক্ষাকৃত দৃঢ় দলটা সেখানে নাস্তিকদের। হবে না কেন, তারা যে প্রচুর পড়াশুনা করেছে! আর আমরা মুসলমানরা যে সত্যধর্মের অনুসারী হয়েও পড়াশুনা করিনি, আমাদের সন্তানদের, ভাই-বোন বন্ধু-বান্ধবদেরকে ইসলামের দৃঢ় অকাট্য জ্ঞান দিতে পারিনি! তাই সত্যের পক্ষে থেকেও আমরা অজ্ঞানতার কারণে দুর্বল, আর মিথ্যার পক্ষে থেকেও আমাদের অজ্ঞানতার সুযোগ নিয়ে পড়াশুনা করা নাস্তিকরা বেশ সবল; আর তাই আমাদের সন্তানদের, ভাই-বোন বন্ধু-বান্ধবদের তারা নিয়ে যাচ্ছে অন্ধকার জগতে...।
অপরদিকে ইউরোপ আমেরিকায় ইসলাম গ্রহণ করা এক একজন সাধারণ মানুষই এতটা স্ট্রং যে, তারা অন্যদেরকে নিয়ে আসছে ইসলামের দিকে!
আমরা কেবল বসে বসে নাস্তিকদের মুখোশ উন্মোচন করে, কাপড় খুলে দিয়ে মজা নিলে হবে না। আমাদের ভুলটা দেখতে হবে। আমরা যে নিজেদের ধর্ম সম্পর্কে গাফেল, সেদিকে নজর দিতে হবে। তা না হলে হয়তো দেখা যাবে যে, "নাস্তিকদের উচিত সাপ-বেজি ইত্যাদি ধর্মনিরপেক্ষা নামকরণ করা_ এসব বলে আমি হাসছি, আর অপর রুমে আমারই ভাই/বন্ধু/সন্তান বসে নাস্তিক্যবাদী স্ট্যাটাস লিখছে। Not unlikely, not unlikely!
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন