যুগযুগ
ধরে আমাদের দেশে শবে বরাত, শবে ক্বদর, ইদে মিলাদুন্নবী (সা.) ইত্যাদি
পালিত হয়ে আসছে। 'বিদআত' শব্দটা আজকে যেভাবে সারা বাংলাদেশের মানুষ জানে,
সেভাবে জানত না ৩০ বছর আগেও।
হঠাতই যেন কোথা থেকে একদল ঝাড়ুদার হাজির হয়েছেন, আমাদের ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবনের ইসলামে 'বিদআত' আবিষ্কার করে ঝাড়ু দিয়ে ঝেড়ে তা পরিষ্কার করে দিবেন। বিনা পয়সায় এত পরোপকার!
না না। গোড়া অনুসন্ধান করলে দেখবেন, আলে সৌদের হারাম টাকাখোর। এরাই হলো সেইসব মানুষ, যারা দ্বীন শিক্ষা দেবার আগে বিদআত শিক্ষা দেয়।
এদের সাইকোলজিকাল গেইমটা খুব সহজ। আপনি সহজ সরল মানুষ, আর সবার মত পরিবার ও সমাজ থেকে শিখে ইসলামী আচার অনুষ্ঠান পালন করেন। হঠাৎ সে এসে আপনার নামাজ, রোজা, নফল ইবাদত ইত্যাদি দেখে আঁতকে ওঠার মত করে বলবে: "আ! সেকি ভাই! আপনার সব আমল তো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে! আপনিতো বিদাতে লিপ্ত!"
আপনিতো সহজ সরল মানুষ। সুন্নাত বিদাত এত শব্দ তো জানেন না। আপনি তার কথা শুনে ভড়কে যাবেন। আর যেহেতু আপনার নিজের ধর্মীয় পড়াশুনা ও এই জগতে দৃঢ় কোনো জ্ঞান নেই, সেহেতু দুর্বল অনুভব করবেন। ব্যস, আপনার উপর সাইকোলজিকাল গেইম শুরু হয়ে যাবে। বেশকিছু আরবি শব্দ ব্যবহার করে, কিছু মুখস্থ 'হাদীস' আউড়িয়ে সে আপনাকে তাৎক্ষণিক প্রমাণ করে দিবে: আপনার জীবনের সব আমল বিদাত হবার কারণে বরবাদ হয়ে গেছে। তখন আপনি বলবেন, ডাক্তার সাব! এখন কী হবে উপায়? যেভাবেই হোক আমার জীবন বাঁচান।
তখন সে আপনাকে প্যারাসিটামল দুইবেলা প্রেসক্রিপশন দেবে। সবকিছু বিদাত আর হারাম, কেবল সৌদি বাদশা করলে সেটা আরাম!
……………………………………………………………
এটা জাস্ট সাইকোলজিকাল গেইম ছাড়া কিচ্ছু না! বহু মানুষ আছে, ডাক্তার না হয়েও খুব গুরুগম্ভীরভাবে বিভিন্ন মেডিকেল বিষয়ে মতামত দেয়, আর দুর্বল সাইকোলজির মানুষেরা তাতে কাবু হয়ে পড়ে।
আমি স্কুল লেভেল থেকে জ্যোতিষবিদ্যা চর্চা ও প্রয়োগ করেছি অনেক বছর। শতশত মানুষের উপর। তখন আমি এটা খুব ভালো করে দেখেছি, কিভাবে সাইকোলজিকাল গেইম খেলে মানুষের কন্ট্রোল নিয়ে নেয়া যায়! হাত দেখে ও জন্মতারিখ শুনে দুই চারটা নেগেটিভ জিনিস বলার পরই মানুষটা দুর্বল বোধ করতে শুরু করে। এরপর অবস্থা এমন হয়ে দাঁড়ায় যে, আমি তাকে যেটা সাদা বলব, সে ওটাকেই সাদা ভাববে, আর যেটা কালো বলব, সে ওটাকেই সেটাকেই কালো ভাববে!
এগুলো সব সাইকোলজিকাল গেইম!
(জ্যোতিষবিদ্যা কোনো ভুয়া বিদ্যা নয়, তবে) জ্যোতিষী, আইনজীবি আর ডাক্তার -- এদের সামনে মানুষের সাইকোলজি যেমন দুর্বল হয়ে পড়ে, তেমনি এসব বিদাত ঝাড়ুদার হুজুরদের সামনে মানুষ দুর্বল হয়ে পড়ে। তারপর এরা শুদ্ধি অভিযানের নামে ধর্মটাকেই পারলে নিশ্চিহ্ন করে বিদাতের নাম করে!
……………………………………………………………
যারাই বিদআত বিদআত বলবে, তা সেটা যে বিষয়েই হোক বা কেন -- তাকে শুধু একটা কথা বলুন:
আপনি গোটা কুরআন বুঝে পড়েছেন কি? সূরা শুরার ২৩ নং আয়াতে রাসুল (সা.) তাঁর রিসালাতের বিনিময়ে পারিশ্রমিক চেয়েছেন মুসলমানদের কাছে। আপনি কুরআনের সেই বিনিময় মূল্য পরিশোধ করেছেন কি? আপনি রাসুল (সা.) এর নিষ্পাপ নিকটাত্মীয়দেরকে ভালোবাসেন কি? অনুসরণ করেন কি?
কুরআনের ব্যাখ্যা তাদের থেকে গ্রহণ করেন কি?
তাদের সূত্রে বর্নিত হাদীসগুলি জানেন কি?
যদি উত্তর না হয় -- এবং অবশ্যই উত্তর না হবে, কিংবা ঘুরানো প্যাঁচানো উত্তর হবে, কিংবা আপনাকে শিয়া ট্যাগ লাগানোর চেষ্টা করবে --
তাহলে আপনি মুখ ঘুরিয়ে নিন। শবে বরাতে কিছু অতিরিক্ত নামাজ পড়ে আল্লাহর কাছে একটু বিশেষভাবে দোয়া করা -- এই কাজের জন্য কোনো দলিল লাগে না। মসজিদে, ঘরে, যেখানেই হোক, নামাজ পড়ুন। মন ভরে দোয়া করুন। রহমান, রহিম আল্লাহর নামে শুরু করুন। তিনি দয়ালু। বিদাত ঝাড়ুদারদেরতে তিনি ইসলাকের ঠিকা দেননি। তারা নিজেরা ঠিকাদারি করতে এসেছে। যারাই বিদাত বিদাত করে, এদের থেকে সাবধান। এদেরকে বর্জন করুন। এদের থেকে দূরত্ব বজায় রাখুন। ধর্ম সংস্কারক সেজে সমাজের শান্তি শৃঙ্খলা নষ্ট করাই এদের কাজ।
.
.
.
আফসোস, আমরা অনেকেই হয়ত সত্যিকারের পীর/আলেম/দরবেশ/সাধক এর দেখা পাইনি। যদি পেতাম, তবে জানতাম যে, তারা কেবল আলোটুকু দেখিয়ে যান। তারা শান্ত, নম্র, ধীর স্থির। তাদের চেহারার দিকে তাকালে চোখ অশ্রুসজল হয়ে ওঠে, খোদাতায়ালার স্মরণ হয়, নবীপ্রেম ও নবীবংশের প্রেম জাগে হৃদয়ে। তাঁরা আলোর পথ দেখান। অন্ধকারের বিরুদ্ধে উচ্চবাচ্য করে ঝড় তোলেন না। তারা যেখানে হেঁটে যান, সেখানেই ফুল ফোটে।
"কণ্ঠস্বর উঁচু নয়, বরং কথার ওজন বৃদ্ধি করো। বজ্রপাতে নয়, বৃষ্টিতেই ফুল ফোটে।"
"অন্ধকারকে গালি দিলেও অন্ধকার দূর হবে না, পিটালেও অন্ধকার দূর হবে না। কেবল আলো আনলেই অন্ধকার দূর হবে।"
আর যারা খাঁটি মুহাম্মদী দ্বীনের আলো বহন করেন, তাঁদের সান্নিধ্যে আপনি ঠিকই প্রশান্তি ও স্থিতিশীলতা অনুভব করবেন। আপনার হৃদয় তাঁদের চিনে নেবে।
হঠাতই যেন কোথা থেকে একদল ঝাড়ুদার হাজির হয়েছেন, আমাদের ব্যক্তিগত ও সামাজিক জীবনের ইসলামে 'বিদআত' আবিষ্কার করে ঝাড়ু দিয়ে ঝেড়ে তা পরিষ্কার করে দিবেন। বিনা পয়সায় এত পরোপকার!
না না। গোড়া অনুসন্ধান করলে দেখবেন, আলে সৌদের হারাম টাকাখোর। এরাই হলো সেইসব মানুষ, যারা দ্বীন শিক্ষা দেবার আগে বিদআত শিক্ষা দেয়।
এদের সাইকোলজিকাল গেইমটা খুব সহজ। আপনি সহজ সরল মানুষ, আর সবার মত পরিবার ও সমাজ থেকে শিখে ইসলামী আচার অনুষ্ঠান পালন করেন। হঠাৎ সে এসে আপনার নামাজ, রোজা, নফল ইবাদত ইত্যাদি দেখে আঁতকে ওঠার মত করে বলবে: "আ! সেকি ভাই! আপনার সব আমল তো নষ্ট হয়ে যাচ্ছে! আপনিতো বিদাতে লিপ্ত!"
আপনিতো সহজ সরল মানুষ। সুন্নাত বিদাত এত শব্দ তো জানেন না। আপনি তার কথা শুনে ভড়কে যাবেন। আর যেহেতু আপনার নিজের ধর্মীয় পড়াশুনা ও এই জগতে দৃঢ় কোনো জ্ঞান নেই, সেহেতু দুর্বল অনুভব করবেন। ব্যস, আপনার উপর সাইকোলজিকাল গেইম শুরু হয়ে যাবে। বেশকিছু আরবি শব্দ ব্যবহার করে, কিছু মুখস্থ 'হাদীস' আউড়িয়ে সে আপনাকে তাৎক্ষণিক প্রমাণ করে দিবে: আপনার জীবনের সব আমল বিদাত হবার কারণে বরবাদ হয়ে গেছে। তখন আপনি বলবেন, ডাক্তার সাব! এখন কী হবে উপায়? যেভাবেই হোক আমার জীবন বাঁচান।
তখন সে আপনাকে প্যারাসিটামল দুইবেলা প্রেসক্রিপশন দেবে। সবকিছু বিদাত আর হারাম, কেবল সৌদি বাদশা করলে সেটা আরাম!
……………………………………………………………
এটা জাস্ট সাইকোলজিকাল গেইম ছাড়া কিচ্ছু না! বহু মানুষ আছে, ডাক্তার না হয়েও খুব গুরুগম্ভীরভাবে বিভিন্ন মেডিকেল বিষয়ে মতামত দেয়, আর দুর্বল সাইকোলজির মানুষেরা তাতে কাবু হয়ে পড়ে।
আমি স্কুল লেভেল থেকে জ্যোতিষবিদ্যা চর্চা ও প্রয়োগ করেছি অনেক বছর। শতশত মানুষের উপর। তখন আমি এটা খুব ভালো করে দেখেছি, কিভাবে সাইকোলজিকাল গেইম খেলে মানুষের কন্ট্রোল নিয়ে নেয়া যায়! হাত দেখে ও জন্মতারিখ শুনে দুই চারটা নেগেটিভ জিনিস বলার পরই মানুষটা দুর্বল বোধ করতে শুরু করে। এরপর অবস্থা এমন হয়ে দাঁড়ায় যে, আমি তাকে যেটা সাদা বলব, সে ওটাকেই সাদা ভাববে, আর যেটা কালো বলব, সে ওটাকেই সেটাকেই কালো ভাববে!
এগুলো সব সাইকোলজিকাল গেইম!
(জ্যোতিষবিদ্যা কোনো ভুয়া বিদ্যা নয়, তবে) জ্যোতিষী, আইনজীবি আর ডাক্তার -- এদের সামনে মানুষের সাইকোলজি যেমন দুর্বল হয়ে পড়ে, তেমনি এসব বিদাত ঝাড়ুদার হুজুরদের সামনে মানুষ দুর্বল হয়ে পড়ে। তারপর এরা শুদ্ধি অভিযানের নামে ধর্মটাকেই পারলে নিশ্চিহ্ন করে বিদাতের নাম করে!
……………………………………………………………
যারাই বিদআত বিদআত বলবে, তা সেটা যে বিষয়েই হোক বা কেন -- তাকে শুধু একটা কথা বলুন:
আপনি গোটা কুরআন বুঝে পড়েছেন কি? সূরা শুরার ২৩ নং আয়াতে রাসুল (সা.) তাঁর রিসালাতের বিনিময়ে পারিশ্রমিক চেয়েছেন মুসলমানদের কাছে। আপনি কুরআনের সেই বিনিময় মূল্য পরিশোধ করেছেন কি? আপনি রাসুল (সা.) এর নিষ্পাপ নিকটাত্মীয়দেরকে ভালোবাসেন কি? অনুসরণ করেন কি?
কুরআনের ব্যাখ্যা তাদের থেকে গ্রহণ করেন কি?
তাদের সূত্রে বর্নিত হাদীসগুলি জানেন কি?
যদি উত্তর না হয় -- এবং অবশ্যই উত্তর না হবে, কিংবা ঘুরানো প্যাঁচানো উত্তর হবে, কিংবা আপনাকে শিয়া ট্যাগ লাগানোর চেষ্টা করবে --
তাহলে আপনি মুখ ঘুরিয়ে নিন। শবে বরাতে কিছু অতিরিক্ত নামাজ পড়ে আল্লাহর কাছে একটু বিশেষভাবে দোয়া করা -- এই কাজের জন্য কোনো দলিল লাগে না। মসজিদে, ঘরে, যেখানেই হোক, নামাজ পড়ুন। মন ভরে দোয়া করুন। রহমান, রহিম আল্লাহর নামে শুরু করুন। তিনি দয়ালু। বিদাত ঝাড়ুদারদেরতে তিনি ইসলাকের ঠিকা দেননি। তারা নিজেরা ঠিকাদারি করতে এসেছে। যারাই বিদাত বিদাত করে, এদের থেকে সাবধান। এদেরকে বর্জন করুন। এদের থেকে দূরত্ব বজায় রাখুন। ধর্ম সংস্কারক সেজে সমাজের শান্তি শৃঙ্খলা নষ্ট করাই এদের কাজ।
.
.
.
আফসোস, আমরা অনেকেই হয়ত সত্যিকারের পীর/আলেম/দরবেশ/সাধক এর দেখা পাইনি। যদি পেতাম, তবে জানতাম যে, তারা কেবল আলোটুকু দেখিয়ে যান। তারা শান্ত, নম্র, ধীর স্থির। তাদের চেহারার দিকে তাকালে চোখ অশ্রুসজল হয়ে ওঠে, খোদাতায়ালার স্মরণ হয়, নবীপ্রেম ও নবীবংশের প্রেম জাগে হৃদয়ে। তাঁরা আলোর পথ দেখান। অন্ধকারের বিরুদ্ধে উচ্চবাচ্য করে ঝড় তোলেন না। তারা যেখানে হেঁটে যান, সেখানেই ফুল ফোটে।
"কণ্ঠস্বর উঁচু নয়, বরং কথার ওজন বৃদ্ধি করো। বজ্রপাতে নয়, বৃষ্টিতেই ফুল ফোটে।"
"অন্ধকারকে গালি দিলেও অন্ধকার দূর হবে না, পিটালেও অন্ধকার দূর হবে না। কেবল আলো আনলেই অন্ধকার দূর হবে।"
আর যারা খাঁটি মুহাম্মদী দ্বীনের আলো বহন করেন, তাঁদের সান্নিধ্যে আপনি ঠিকই প্রশান্তি ও স্থিতিশীলতা অনুভব করবেন। আপনার হৃদয় তাঁদের চিনে নেবে।
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন