সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

ইরানের সর্বোচ্চ ধর্মীয় নেতা আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ী

সেপ্টেম্বর ২০১০ :
"সুন্নি ভাইদের ধর্মীয় আধ্যাত্মিকতার চিহ্নসমূহকে অসম্মান করা, এবং অন্যান্য জিনিসের মাঝে নবীর স্ত্রীগণের বিরুদ্ধে ভিত্তিহীন অভিযোগ খাড়া করা হারাম। এই নিয়ম সকল নবীর স্ত্রীগণের ক্ষেত্রে প্রযোজ্য, বিশেষতঃ মহানবী (সা.) এর (স্ত্রীগণের ক্ষেত্রে)।"

মে ২০০৯ : "সুন্নি বিশ্বাসের নামেই হোক বা শিয়া বিশ্বাসের নামেই হোক, যারা শিয়া-সুন্নি বিভক্তিকে প্রমোট করে তারা মুসলিম ঐক্যকে বিনষ্ট করছে, এবং জেনে হোক বা না জেনে হোক তারা শত্রুর এজেন্ট। কখনো কখনো এরা অসচেতনভাবেই শত্রুদের এজেন্ট। ইরাক, আফগানিস্তান, পাকিস্তান ও অন্যান্য জায়গায় সন্ত্রাসী কর্মকাণ্ড পরিচালনার জন্য তেলের অর্থপুষ্ট অজ্ঞ ওয়াহাবি-সালাফি -- তারা জানে না যে তারা শত্রুদের এজেন্ট। যেসব শিয়া মহান সুন্নি ব্যক্তিত্বদের অপমান করে, তারাও শত্রুদেরই লোক, এমনকি যদিও তারা সেটা জানে না।"

জুন ৭, ১৯৯৪ :
"ভুল কাজগুলোর অন্যতম হলো তাতবীর (শোক প্রকাশ করতে শরীর রক্তাক্ত করা)। আমি জানি কেউ কেউ বলবে : “এনিয়ে তিনি কথা না বললেই ভালো হতো।” তারা বলবে : “তাতবীর নিয়ে আপনার এত চিন্তা কেনো ? কেউ কেউ এটা করে, তাদেরকে করতে দিন !”
না ! এমন ভুল কাজ দেখে কেউ চুপ থাকতে পারে না।
ছুরি দিয়ে মাথায় আঘাত করে রক্তপাত করা – এটা নিশ্চিতভাবেই ভুল কাজ। এর মাধ্যমে তারা কী পাবার আশা করছে ?! কী করে এটা শোক প্রকাশের উপায় হতে পারে ?!
অবশ্যই মাথা চাপড়ানো শোক প্রকাশের একটা উপায়। আপনারা দেখেছেন যে কেউ যখন দুঃখ-কষ্টে আপতিত হয়, তখন সে বুক-মাথা চাপড়ায়। এটা শোক প্রকাশের প্রচলিত একটা পদ্ধতি। কিন্তু কোথায় দেখেছেন যে কারো প্রিয় ব্যক্তি মারা গিয়েছে, আর সে ছুরি দিয়ে নিজের মাথা রক্তাক্ত করছে ?! এটা কীভাবে শোক প্রকাশের উপায় হতে পারে ?

তাতবীর (শোক প্রকাশ করতে শরীর রক্তাক্ত করা) এর এই মিথ্যা ট্র্যাডিশানটি তৈরী করা হয়েছে। এটা ধর্মবহির্ভূত কাজ, এবং নিঃসন্দেহে এজাতীয় কাজকে আল্লাহ পছন্দ করেন না।

আমি যতই এটা নিয়ে ভেবেছি, ততই উপলব্ধি করেছি যে ধর্মবহির্ভূত এই কাজটির ব্যাপারে আমাদের জনগণকে সতর্ক করাকে আমি এড়িয়ে যেতে পারি না।
এমন কাজ (তাতবীর) করবেন না। আমি এতে সম্মতি দিই না। কেউ যদি এমন ইঙ্গিত দেয় যে সে তাতবীর করতে চায়, আমি সত্যিই তার ব্যাপারে অসন্তুষ্ট হবো। আমি দৃঢ়ভাবে এটা ঘোষণা করছি।"


হজ্জ্ব বাণী, ২০১৩ :
"গৃহযুদ্ধ, ধর্মীয় ও গোত্রীয় অহংকার, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা, সন্ত্রাসের বিস্তার, চরমপন্থী মতাদর্শ ও গ্রুপের উত্থান -- যারা কিনা ইতিহাসের বর্বর গোত্রের মত মানুষের বুক চিরে কলিজা বের করে চিবায়, ভাড়া করা সন্ত্রাসীদের উত্থান -- যারা নারী ও শিশুদের হত্যা করে, মানুষের মাথা কেটে ফেলে, নারীদের ধর্ষণ করে; এবং এরা ছাড়াও আরো যারা ধর্মের নামে ভয়াবহ ঘৃণ্য অপরাধ করে থাকে -- এরা সবাই-ই বিদেশী ইন্টেলিজেন্ট সার্ভিসের এজেন্টদের শয়তানি পরিকল্পনার ফসল।

এমন ভয়াবহ অবস্থা ইসলামী জাগরণকে স্থগিত করে দিতে পারে, ইসলামী দুনিয়ার মানসিক সচেতনতা ধ্বংস করে দিতে পারে, মুসলমানদের আবারো নিয়ে যেতে পারে স্থবিরতা, বিচ্ছিন্নতা ও অবনতির দিকে। ভুলিয়ে দিতে পারে ইহুদী ও মার্কিন হস্তক্ষেপ থেকে ফিলিস্তিন ও অন্যান্য মুসলিম জাতিকে উদ্ধার করার মত গুরুত্বপূর্ণ ও মৌলিক ইস্যুগুলোকে।

এ পরিস্থিতির সবচে' গুরুত্বপূর্ণ সমাধানকে দুটি বাক্যে সংক্ষেপিত করা যায়, যেটা হজ্জ্বের শিক্ষাও বটে :

প্রথমতঃ তাওহীদের পতাকার নিচে মুসলমানদের ঐক্য ও ভ্রাতৃত্ব।
দ্বিতীয়তঃ শত্রুকে জানা এবং তার পরিকল্পনা ও পদ্ধতিকে মোকাবিলা করা।"


সেপ্টেম্বর, ২০১৩ :
"To liberate a nation, you don’t drop bombs on them."

অগাস্ট ২২, ২০১৩ :
``How can some people try to provoke dispute among Shias and Sunnis while they have the same God, Prophet, Quran, Qibla, ways of praying and despite all these similarities they create enmity among Muslims?! Is not this treason? Is not this an evil-doing done by the evil-minded and an ignorance produced by the ignorant?``

"Dear brothers and sisters! The tool in the hands of our enemies that can be activated is called discord. They are trying to create discord among Muslims under such pretexts as Shia-Sunni Islam, ethnicity and nationality as well as these people’s false pride. They are trying to create discord by magnifying Shia-Sunni differences. You see that they are creating discord in Islamic countries which have carried out a revolution as well as other Islamic countries. Everybody should be vigilant. The west and America are the enemies of the world of Islam. We should address and respond to this issue from this perspective. They are provoking the emotions of the people. Their intelligence services are working very hard and they sow destruction wherever they can.
Americans, Zionists and global arrogant powers are interested in neither the Shia nor the Sunni. They are antagonistic towards both of them. They are opposed to all efforts made by Muslims to stand up to their coercion in the name of Allah and by relying on their Islamic faith. As you can see, they are as antagonistic towards the Lebanese Shia Hezbollah as they are to the Sunni Palestinian Hamas and Islamic Jihad.
Those agents that are seeking to sow the seeds of discord are neither Shia nor Sunni Muslims; they are not interested either in the Shia or in the Sunni; they have no respect for the sanctities of either the Shia or the Sunni."



মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

টাকার ইতিহাস, মানি মেকানিজম ও ব্যাঙ্কিং সিস্টেমের মহা জুলুম

ভূমিকা: জালিমের বিরুদ্ধে বুদ্ধিবৃত্তিক সংগ্রাম  (মহররম: ইনফো সিরিজ এর শেষ পোস্ট ছিল এটা। মূল সিরিজটি পড়ে আসুন ) জুলুমের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের মাস হলো মহররম মাস। জালিমের মুখোশ উন্মোচনের মাস মহররম। জুলুমের কূটকৌশল উন্মোচনের মাস মহররম। আধুনিক সেকুলার গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় লেজিসলেশান (সংসদ), আর্মড ফোর্সেস (আর্মি) ও জুডিশিয়ারি (আদালত) হলো এক মহা জুলুমের ছদ্মবেশী তিন যন্ত্র, যারা পরস্পর পরস্পরকে সাহায্য করে জুলুম টিকিয়ে রাখার জন্য। তারচেয়েও বড় জালিম হলো big corporations: বড় বড় মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি, যারা তাবৎ দুনিয়াকে দাস বানিয়ে রেখেছে। আর এই দাসত্বের শৃঙ্খলে তারা আমাদেরকে আবদ্ধ করেছে ব্যাঙ্কিং সিস্টেমের মাধ্যমে: টাকা আমাদের শ্রমকে ধারণ করে, অথচ সেই টাকার মূল্য আপ-ডাউন করায় অন্যরা -- ব্যাংক ব্যবসায়ীরা! টাকা আমাদের শ্রমকে সঞ্চয় করার মাধ্যম, অথচ সেই টাকা আমরা প্রিন্ট করি না, প্রিন্ট করে (ব্যাংকের আড়ালে) কিছু ব্যবসায়ী! সেই টাকার মান কমে যাওয়া (বা বেড়ে যাওয়া) আমরা নির্ধারণ করি না -- নির্ধারণ করে ব্যাঙ্ক (ব্যবসায়ীরা)! ইমাম হুসাইনের (আ.) প্রতিবাদী চেতনাকে ধারণ করব, শোকাহত হ

ধর্মব্যবসা: মুসলমানদের হাতে ইসলাম ধ্বংসের অতীত-বর্তমান (১)

ভূমিকা যদিও পলিটিকাল-রিলিজিয়াস ইস্যুতে নিশ্ছিদ্র আর্গুমেন্ট উপস্থাপন করে আলোচনা করার অভ্যাস আমার, কিন্তু এখানে বিস্তারিত ইতিহাস তুলে ধরে আর্গুমেন্ট করার প্রথমতঃ ইচ্ছা নেই, দ্বিতীয়তঃ সময় ও সুযোগ নেই। আমি যা সত্য বলে জানি, তা সংক্ষেপে তুলে ধরছি। যারা আমার উপর আস্থা রাখেন তাদের জন্য এই লেখাটি সোর্স অব ইনফরমেশান, উন্মুক্ত হৃদয়ের মানুষদের জন্য সত্য অনুসন্ধানের নতুন কিছু টপিক, আর প্রেজুডিসড ধর্মান্ধ রোগগ্রস্ত অন্তরের জন্য রোগ বৃদ্ধির উছিলা। শেষ পর্যন্ত আর্গুমেন্ট ও ডায়লগের দুয়ার উন্মুক্ত রাখার পক্ষপাতী আমি, কিন্তু সেই আর্গুমেন্ট অবশ্যই সত্য উন্মোচনের নিয়তে হওয়া উচিত, নিজের দীর্ঘদিনের লালিত বিশ্বাস ও ধ্যান ধারণাকে প্রতিষ্ঠা করবার উদ্দেশ্যে নয়। মক্কা-মদীনা: মুহাম্মদ (সা.) থেকে আলে-সৌদ (৬২৯-১৯২৪) এদেশের অধিকাংশ মানুষ মক্কা-মদীনার ইতিহাস কেবল এতটুকু জানেন যে, মুহাম্মদ (সা.) মদীনায় ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেন এবং পরবর্তীতে বিনা রক্তপাতে মক্কা বিজয় করেন। কিন্তু প্রায় চৌদ্দশ’ বছর আগে মুহাম্মদ (সা.) এর প্রতিষ্ঠিত ইসলামী রাষ্ট্র থেকে আজকের রাজতান্ত্রিক সৌদি আরবের ইতিহাস কম মানুষই জানেন। প

পিস টিভি, জাকির নায়েক ও এজিদ প্রসঙ্গ

সম্প্রতি গুলশান হামলার পরিপ্রেক্ষিতে ইন্ডিয়া ও বাংলাদেশে পিস টিভির সম্প্রচার বন্ধ করা হয়েছে। আমি তখন দিল্লীতে ছিলাম। দেশে ফিরে শুনি পিস টিভি ব্যান করা হয়েছে বাংলাদেশে, এবং তার আগে ইন্ডিয়াতে। আমার বাসায় টিভি নেই, এবং আমি জাকির নায়েকের লেকচার শুনিও না। কিংবা পিস টিভিতে যারা লেকচার দেন, বাংলা কিংবা ইংলিশ -- কোনোটাই শুনি না; প্রয়োজন হয় না। তাছাড়া আমার ইসলামের বুঝ জাকির নায়েকসহ পিস টিভি ও তার বক্তাদেরকে ইন জেনারেল আমার কাছে অগ্রহণযোগ্য করে তুলেছে। Peace TV বন্ধ হওয়ায় এদেশে বিকৃত ইসলাম প্রসারের গতি কমলো -- এটাই আমার মনে হয়েছে। একইসাথে আমি এটাও মনে করি যে, যেই অভিযোগ পিস টিভিকে ব্যান করা হয়েছে, তা নিছক অজুহাত। জাকির নায়েক কখনো জঙ্গীবাদকে উস্কে দিয়েছেন বলে আমার জানা নেই। কিংবা পিস টিভির লেকচার শুনে শুনে ISIS জঙ্গীরা সন্ত্রাসী হয়েছে -- এটা নিতান্তই হাস্যকর কথা। ISIS এর ধর্মতাত্ত্বিক বেইজ সম্পর্কে মোটেও ধারণা নেই, এমন লোকের পক্ষেই কেবল ISIS এর জন্য জাকির নায়েককে দোষ দেয়া সম্ভব। একইসাথে আমি এ বিষয়েও সচেতন যে, পিস টিভি বন্ধ করা হয়েছে আমাদের সরকারের রেগুলার “ইসলামবিরোধী কর্মকাণ্ডের অংশ