সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

বিবিধ

ফেব্রুয়ারি ২২, ২০১৪।
ক্রিকেটার সাকিব আল হাসান ড্রেসিংরুমে বসে ক্যামেরাম্যানের দিকে অশ্লীল অঙ্গভঙ্গি করেছে, সুতরাং সেটা অসংখ্য সাকিব-প্রেমীর হৃদয় ভেঙে দিয়েছে। কারণ তারা এই খেলোয়াড়কে কখনোই শুধু খেলোয়াড় হিসেবে দেখেনি, বরং পূজনীয় হিসেবে হৃদয়ে স্থান দিয়েছে।
বেশতো, এখন টিভির সামনে বসে থাকা সাকিব-প্রেমী বাবা-মা-ভাই-বোন সবাইকে একসাথে লিঙ্গ প্রদর্শন করে দিলো সে।

একটা মানুষকে কিভাবে পূজনীয় দেবতা করে তোলা হয়, তার উৎকৃষ্ট উদাহরণ হলো এই সাকিব আল হাসান। মোবাইল অপারেটর অ্যাডে, ল্যাপটপের সাথে, ক্যামেরার সাথে -- কীসের সাথে সাকিব আল হাসানের ছবি নেই ! তাকে এই জাতি মন-প্রাণ দিয়ে ভালোবাসছে; অথচ সে কী করেছে ? এই জাতির মুক্তির জন্য কিছু করেছে কি ?
না, কিছুই করেনি। সে ব্যাটে-বলে ভালো সংযোগ করতে পারে। এটুকুই তার যোগ্যতা। এর বেশি কিছু না। অনেক গৃহিনীও তো সুস্বাদু খাবার রান্না করতে পারে !

আবার কেউ কেউ দেখছি তাকে তিন ম্যাচ সাসপেন্ড ও তিন লাখ টাকা জরিমানা করায় ক্ষুব্ধ, মর্মাহত। এ যেনো এমন যে, এই জাতির প্রিয় নবীকে আল্লাহ তায়ালা শাস্তি দিয়েছেন, তাই জাতি কষ্ট পেয়েছে।

ক্রিকেট যে একটা জাতিগত নেশায় পরিণত হয়েছে, তা এই নেশার ভিতরে থাকা মানুষদের পক্ষে বোঝা কঠিন। আল্লাহই জানেন এই নেশার ঘোর কাটবে কিনা। যারা গোটা ব্যাপারটার সমস্যা এখনও বুঝতে পারছে না, যারা এখনও ক্রিকেট ও ক্রিকেটার পূজায় নিমজ্জিত, এই ঘটনার পর তাদের হৃদয় থেকে সাকিব চলে গেলে সেখানে শীঘ্রই তারা নতুন কোনো সাকিবকে বসাবে। তবুও ক্রিকেটার পূজা বন্ধ হবে না। আগে যখন বাংলাদেশ ক্রিকেটের অবস্থা ভালো ছিলো না, তখন এই পূজারীরা অস্ট্রেলিয়া, ইত্যাদি বিভিন্ন দেশের ক্রিকেটারদের পূজা করতো। এখন নিজের দেশে পেয়ে সেই অহংকার যুক্ত হয়েছে, তাই দেশী ক্রিকেটারকে পূজা করছে। বাংলাদেশ ক্রিকেট আবার পড়ে গেলে তখন নতুন কাউকে পূজা করবে।

এই সাকিব আল হাসানকে নিয়ে মাতামাতি বন্ধ করা উচিত। এদের নামোচ্চারণই করা উচিত না। বাংলাদেশসহ দুনিয়ার অসংখ্য মানুষ যেখানে নির্যাতিত, নিপীড়িত, সেখানে কী করে এদেশের "মুসলমানেরা" নিজেদের পকেটের টাকা খরচ করে এইসব দেবতাদের লালন ও পূজা করে চলেছে ! কোটি কোটি টাকা -- চিন্তা করা যায় ! এই ক্রিকেটের পিছনে ব্যয় হয়ে যাচ্ছে।
একটা লোক ব্যাট দিয়ে বলকে পিটালো, আরেকটা লোক বল নিয়ে তীব্র গতিতে ছুটে যাচ্ছে, কেউ আবার উড়ন্ত বল ধরে ফেললো -- এইসব দৃশ্য এই জাতিকে উত্তেজিত করে। অথচ মুসলমানের মৃত্যু, মানুষের মৃত্যু তাদেরকে উত্তেজিত করে না।

আল্লাহ কোনো কিছু সংখ্যা দিয়ে বিচার করেন না। ইতিহাসে অসংখ্য জাতি ছিলো, যাদের আগা-সে-গোড়া ছিলো নষ্ট। আল্লাহ তাদের গোটা জাতিকে ধ্বংস করে দিয়েছেন। বজ্রপাতে, ভূমিকম্পে, জলোচ্ছাসে। এই গোটা বাঙালি জাতি ধ্বংস হয়ে গেলেও আল্লাহর কিছুই হবে না।

এসমস্ত খেলা একপ্রকার নেশা। বুদ্ধিমান মানুষের বোঝা উচিত।
"হে আল্লাহ, সাকিব কেনো এমন করলো !" "আল্লাহ ! সাকিব যেনো আবারও অলরাউন্ডার তালিকায় থাকে," "আল্লাহ, বাংলাদেশ যেনো খেলায় জিতে দেশের মুখ উজ্জ্বল করে" -- এজাতীয় অসার প্রার্থনা ও অসার অনুভুতি -- না এগুলোর কোনোটা পরকালে কাজে দেবে, আর না আল্লাহর এসব অসার প্রার্থনার দিকে মনোনিবেশ করেন।
"বাংলাদেশ ক্রিকেট টিমের বিরুদ্ধে "তিন জমিদার" এর ষড়যন্ত্র "রুখতে" আমি শাহবাগে গিয়ে প্রতিবাদ জানিয়েছিলাম হে আল্লাহ !" (আর তোমার ও তোমার রাসূলের অবমাননার সময় চুপ সাকিবের খেলা দেখছিলাম) -- এজাতীয় কোনো কথাই পরকালে কাজে আসবে না। সময় থাকতে মানুষের বোঝা উচিত। এই নেশা থেকে উঠে আসা উচিত।



Before you speak, learn the art of speaking. Because there comes moments in life which you will ever regret just because you said it improperly. A powerful speech has a good mix of art in it.

অক্টোবর ২৯, ২০১৩ :
স্থান-কাল-পাত্র-বিষয় ভেদ জ্ঞান মাথায় রেখে কথা বললেই তা উপযুক্ত হয়।
একজন আলেম, আলেমদের মহলে যেভাবে কথা বলেন, সাধারণ জনগণের সাথে সেভাবে কথা বলেন না।
আলেমদের সামনে হয়তো কোনো বক্তব্যের পক্ষে অনেকগুলো যুক্তি-রেফারেন্স উত্থাপন করে কথা বলেন, কিন্তু সাধারণ জনগণের সামনে কথা বললে সেই একই বিষয়কে জাস্ট বলে দেন, অনেকটা সিদ্ধান্ত বা স্বতঃসিদ্ধ সত্য হিসেবে।

তো, ফেসবুকে কমেন্ট অনেক রকমই আসতে পারে। আগেকার দিনের প্রচলিত স্থান-কাল-পাত্র ভেদ থেকে এই ফেসবুককে আলাদাভাবে বিবেচনা করতে হবে।
(এই নিয়ে মেবি আগে একটা স্ট্যাটাস দিয়েছিলাম।)

মুসলমানদের আন্তঃদ্বন্দে যারা ভুল-ভ্রান্তিতে পতিত, তাদেরকে মোটা দাগে দুইভাগে ভাগ করা যায় :
১. ইচ্ছা করে ভ্রান্তি ছড়াচ্ছে এবং গোঁ ধরে আছে যে তা ছাড়বেই না
২. অনিচ্ছাকৃতভাবে ভ্রান্তিতে পতিত হয়ে ভ্রান্তির প্রচার করছে।

উভয়ক্ষেত্রেই, প্রথমে লক্ষ্য করা উচিত আমার উদ্দেশ্য কী ?
আমার উদ্দেশ্য হলো তার ভ্রান্তি দূর করা। এখন, কোন কৌশলে কথা বললে ভ্রান্তি দূর হবে, সে আমার কথা গ্রহণ করবে, তা আগে জানতে হবে। এজন্যে টার্গেট অডিয়েন্সকে বুঝতে হবে।
(অনেকটা যেমন আয়াতুল্লাহ খামেনেয়ী বলেছেন হজ্জ্ব মেসেজে, হজ্জ্বের শিক্ষা হিসেবে : শত্রুকে জানা ও বোঝা। অর্থাৎ শত্রুকে চেনা। তবে এক্ষেত্রে পজিটিভ সেন্স এ আরকি।)

ফেসবুকে বেশিরভাগ মানুষ, যারা ধর্মীয় বিষয়ে বাগবিতণ্ডায় লিপ্ত হয় কিংবা বাহাসে লিপ্ত হয়, তারা ধৈর্য ধরে রাখতে পারে না। আর উত্তেজনা চলে আসলেই সব পণ্ড হয়ে যায়।
আরেকটা লক্ষ্যনীয় বিষয় হলো, art of speaking (এটা নিয়ে বর্তমানে লেখা তৈরী করছি)।
এর একটি গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো, কারো ভুল জনগণের সামনে কিংবা প্রকাশ্য ময়দানে প্রকাশ করলে খুব কম মানুষই তা গ্রহণ করে, মেনে নেয় ও ভুল স্বীকার করে। বেশিরভাগ মানুষ যা করবে তা হলো : অপমানিত বোধ করবে এবং নিজের মান সম্মান ধরে রাখার জন্য ঐ মিথ্যার উপর গোঁ ধরে সেটাকে আরো আঁকড়ে ধরবে।
সেক্ষেত্রে ভিন্ন কৌশল অবলম্বন করা উচিত।

আর একটি ব্যাপার হলো, ফেসবুকের মত প্ল্যাটফর্ম, যেখানে ধরেই নেবেন যে আপনার (সম্ভাব্য বিতর্কিত) বক্তব্য / লেখাটি জ্ঞানী থেকে শুরু করে মূর্থ পর্যন্ত সব মানুষই পড়বে, এবং তাদের লেভেল অনুযায়ী একই ময়দানে (অর্থাৎ একই স্ট্যাটাসে) কমেন্ট করবে, সেখানে আপনার বক্তব্য হতে হবে ময়দানের বক্তব্যের মত : একবার বক্তব্য দিয়েই শেষ। সেখানে বাহাস চলবে না।

অর্থাৎ, সর্বোপরি আমার মনে হয় যে, ফেসবুকে বাহাস করা উচিত নয়। কেবল নীরবে সত্য কথাটি একটি "পরিপূর্ণ" কমেন্ট আকারে দিয়ে স্থান ত্যাগ করা উচিত। এখানে গুরুত্বপূর্ণ ব্যাপার হলো : "পরিপূর্ণ" কমেন্ট। অর্থাৎ যে কমেন্টে বিপরীতের সম্ভাব্য সকল প্রশ্নের উত্তর আছে। এবং ব্যক্তি অ্যাড্রেস না করে জেনারেল স্টেটমেন্ট দেয়া।
তারপর লোকে আমাকে গালি দিক কি আমাকে হত্যা করতে আসুক কী যা খুশি তাই বলুক-করুক -- নবী রাসূলগণের অনুসরণ করলে সত্য পৌঁছে দেওয়াটুকুই আমাদের কাজ। গ্রহণ করা না করা ব্যক্তির ব্যাপার।

অক্টোবর ৮, ২০১৩ :
সত্যের প্রচারকদের কর্মপন্থা যেন কখনোই প্রপাগ্যান্ডিস্টদের মত না হয়।

সেপ্টেম্বর ২৫, ২০১৩ :
স্থান-কাল-পাত্র-বিষয় ভেদে বক্তব্য / আলোচনা / বিতর্কের ধরণ পরিবর্তিত হওয়া বাঞ্ছনীয়। স্কলারগণ নিজেদের মাঝে একভাবে কথা বলেন, আবার সেই একই বিষয় জনসাধারণের সম্মুখে তুলে ধরতে আরেক ভাষা ও অ্যাপ্রোচ ব্যবহার করেন।

ফেসবুকের মত প্ল্যাটফর্ম পূর্বের যেকোনো "স্থান-কাল-পাত্র-বিষয়” বিবেচনা থেকে আলাদাভাবে বিবেচ্য।সবদিক বিবেচনায় এজাতীয় প্ল্যাটফর্মে বিতর্কে অবতীর্ণ হওয়া সাধারণভাবে সমীচিন নয়।
কারণ এখানে স্কলার লেভেল থেকে শুরু করে নিতান্তই কম জানাশোনা ব্যক্তি, দুশ্চরিত্র ব্যক্তি কিংবা অহেতুক তর্ককারী মূর্খ ব্যক্তি – সবারই সমাবেশ ঘটে থাকে। এখানে বাজে তর্কের সম্মুখীন হওয়া প্রায় অবশ্যম্ভাবী। আবার স্কলারলি বিরোধিতার সম্মুখীন হওয়াও অসম্ভব নয়। সেক্ষেত্রে ভালো হয় যদি সবগুলো কমেন্ট থেকে বিরোধিতা / কনফিউশনের পয়েন্টগুলো নোট করে সবগুলোকে গুছিয়ে একত্রে অ্যাড্রেস করলে।

এক্ষেত্রে :
১. মূর্খের সাথে তর্কে লিপ্ত না হওয়ার কোরআনের আদেশ মান্য কর হলো।
২. সৎ কাজের আদেশ ও অসৎ কাজের নিষেধ (কিংবা সত্যের প্রচার এবং মিথ্যাকে খণ্ডন) – কোরআনের এই আদেশও মানা হলো।
৩. স্কলার লেভেলের ব্যক্তিদের বিরোধিতার জবাবও দেওয়া গেলো, এবং সেটা কোরআনের নির্দেশমতো উত্তম পন্থায়-ই হলো।
৪. সাধারণ পাঠককে তুলনা করার জন্য দুই রকম বক্তব্য-ই পড়ার সুযোগ দেয়া গেলো।


অগাস্ট ২৯, ২০১৩ :
"একটা কলমকে বালতির পানিতে ডুবিয়ে উঠালে যেটুকু পানি ধরবে, তাকে সাগরে ডুবিয়ে তুললেও একই পরিমাণ পানি ধরবে।"

জুন ২৮, ২০১৩ :
অনেকের ক্ষেত্রে অনেক রকম হতে পারে, কিন্তু আমি দেখেছি যে বিদায়ের মূহুর্তে যেসব কথা বলবার ছিলো, তা কখনোই বলা হয়ে ওঠে না। বরং সেই বিদায়টা হয় অন্যান্য বিদায়ের মতই গতানুগতিক।
যে বিদায়টি স্মৃতিতে প্রবল হবে, তাকে মনমতো করতে না পারার যে কী বেদনা !


ফেব্রুয়ারি ২৮, ২০১৩ :
"I think he knows what Rome is. Rome is the mob. He'll conjure magic for them and they'll be distracted. He'll take away their freedom and still they'll roar. The beating heart of Rome is not the marble of the Senate, it's the sand of the Colosseum. He'll bring them death...and they will love him for it."

ফেব্রুয়ারি ৭, ২০১৩ :
No matter they come to kill you or not, someday you will have to die anyway. So don't let that fear stop you from telling the truth. Perhaps you will achieve great things than to keep mute. And if you die without ever fighting for the truth, it's probably gone in vain.

জানুয়ারি ১৬, ২০১৩ :
মালালা ইস্যু : ডেড।
নিত্যনতুন ইস্যু নিয়ে মেতে থাকাটাই এখনকার মানুষের কাজ। তা সে ইস্যু ভালো বিষয়েই হোক কি খারাপ বিষয়েই হোক। ভারতের "দামিনী" ইস্যুও ক'দিন পর শেষ হয়ে যাবে। নাফিস ইস্যুও মরে গিয়েছে। স্কাইপ ইস্যুও বেশ ক'দিন গরম ছিলো। তার পরপরই মাহমুদুর রহমান গুমের আশঙ্কায় অবরুদ্ধ হলেন -- সেটাও প্রথম দিকে গরম ইস্যু ছিলো। গত ডিসেম্বর মাসে জামাত-শিবিরের হরতাল-মিছিল এবং গ্রেফতার হওয়াটাও গরম ইস্যু ছিলো। ওহ-হো, ভুলেই গিয়েছি, বিশ্বজিতও বেশ একটা ইস্যু ছিলো।

এখনকার মানুষ আসলে সত্যিকার অর্থে কোনো cause নিয়ে মাথা ঘামায় না। যখন যেই ইস্যু সামনে আসে তখন সেটা নিয়ে ফেসবুকে কিছু শেয়ার করা, No one killed Biswajeet টাইপের কাভার ফোটো দেয়া, কিংবা প্রোফাইল ফোটো চেইঞ্জ করার মাধ্যমে প্রতিবাদ জানানো আর অনলাইনে তর্ক-বিতর্ক করে ব্রেইনকে স্টিম্যুল্যান্ট দেওয়া -- এসব করেই খালাস।

কেউ কেউ আবার এসব দুনিয়ারই বাইরে : তাদের দুনিয়ায় বিভিন্ন ইন্ডিয়ান সিরিয়ালের স্লো-মোশান দৃষ্টি, "ছাসসস..." "শাঁআআআ...ওওও..." ইত্যাদি শব্দ আর সাজ পোশাক ও খাওয়া-দাওয়া।

বড়ই তামাশা। যারা "জেগে ওঠার সময় হয়েছে," কিংবা "মানুষ জেগে উঠেছে," ইত্যাদি বলে বেড়ায় কিংবা অনলাইনে প্রচণ্ড তর্ক-বিতর্ক করে নিজের সচেতনতার সর্বোচ্চটা দেখিয়ে দেয়, তারাও আসলে ব্রেইনকে স্টিম্যুল্যান্ট দেয়া ছাড়া কিছুই করছে না। চা-কফি সবাই-ই খায় কিনা, তাই আরকি।



মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

টাকার ইতিহাস, মানি মেকানিজম ও ব্যাঙ্কিং সিস্টেমের মহা জুলুম

ভূমিকা: জালিমের বিরুদ্ধে বুদ্ধিবৃত্তিক সংগ্রাম  (মহররম: ইনফো সিরিজ এর শেষ পোস্ট ছিল এটা। মূল সিরিজটি পড়ে আসুন ) জুলুমের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের মাস হলো মহররম মাস। জালিমের মুখোশ উন্মোচনের মাস মহররম। জুলুমের কূটকৌশল উন্মোচনের মাস মহররম। আধুনিক সেকুলার গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় লেজিসলেশান (সংসদ), আর্মড ফোর্সেস (আর্মি) ও জুডিশিয়ারি (আদালত) হলো এক মহা জুলুমের ছদ্মবেশী তিন যন্ত্র, যারা পরস্পর পরস্পরকে সাহায্য করে জুলুম টিকিয়ে রাখার জন্য। তারচেয়েও বড় জালিম হলো big corporations: বড় বড় মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি, যারা তাবৎ দুনিয়াকে দাস বানিয়ে রেখেছে। আর এই দাসত্বের শৃঙ্খলে তারা আমাদেরকে আবদ্ধ করেছে ব্যাঙ্কিং সিস্টেমের মাধ্যমে: টাকা আমাদের শ্রমকে ধারণ করে, অথচ সেই টাকার মূল্য আপ-ডাউন করায় অন্যরা -- ব্যাংক ব্যবসায়ীরা! টাকা আমাদের শ্রমকে সঞ্চয় করার মাধ্যম, অথচ সেই টাকা আমরা প্রিন্ট করি না, প্রিন্ট করে (ব্যাংকের আড়ালে) কিছু ব্যবসায়ী! সেই টাকার মান কমে যাওয়া (বা বেড়ে যাওয়া) আমরা নির্ধারণ করি না -- নির্ধারণ করে ব্যাঙ্ক (ব্যবসায়ীরা)! ইমাম হুসাইনের (আ.) প্রতিবাদী চেতনাকে ধারণ করব, শোকাহত হ

ধর্মব্যবসা: মুসলমানদের হাতে ইসলাম ধ্বংসের অতীত-বর্তমান (১)

ভূমিকা যদিও পলিটিকাল-রিলিজিয়াস ইস্যুতে নিশ্ছিদ্র আর্গুমেন্ট উপস্থাপন করে আলোচনা করার অভ্যাস আমার, কিন্তু এখানে বিস্তারিত ইতিহাস তুলে ধরে আর্গুমেন্ট করার প্রথমতঃ ইচ্ছা নেই, দ্বিতীয়তঃ সময় ও সুযোগ নেই। আমি যা সত্য বলে জানি, তা সংক্ষেপে তুলে ধরছি। যারা আমার উপর আস্থা রাখেন তাদের জন্য এই লেখাটি সোর্স অব ইনফরমেশান, উন্মুক্ত হৃদয়ের মানুষদের জন্য সত্য অনুসন্ধানের নতুন কিছু টপিক, আর প্রেজুডিসড ধর্মান্ধ রোগগ্রস্ত অন্তরের জন্য রোগ বৃদ্ধির উছিলা। শেষ পর্যন্ত আর্গুমেন্ট ও ডায়লগের দুয়ার উন্মুক্ত রাখার পক্ষপাতী আমি, কিন্তু সেই আর্গুমেন্ট অবশ্যই সত্য উন্মোচনের নিয়তে হওয়া উচিত, নিজের দীর্ঘদিনের লালিত বিশ্বাস ও ধ্যান ধারণাকে প্রতিষ্ঠা করবার উদ্দেশ্যে নয়। মক্কা-মদীনা: মুহাম্মদ (সা.) থেকে আলে-সৌদ (৬২৯-১৯২৪) এদেশের অধিকাংশ মানুষ মক্কা-মদীনার ইতিহাস কেবল এতটুকু জানেন যে, মুহাম্মদ (সা.) মদীনায় ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেন এবং পরবর্তীতে বিনা রক্তপাতে মক্কা বিজয় করেন। কিন্তু প্রায় চৌদ্দশ’ বছর আগে মুহাম্মদ (সা.) এর প্রতিষ্ঠিত ইসলামী রাষ্ট্র থেকে আজকের রাজতান্ত্রিক সৌদি আরবের ইতিহাস কম মানুষই জানেন। প

পিস টিভি, জাকির নায়েক ও এজিদ প্রসঙ্গ

সম্প্রতি গুলশান হামলার পরিপ্রেক্ষিতে ইন্ডিয়া ও বাংলাদেশে পিস টিভির সম্প্রচার বন্ধ করা হয়েছে। আমি তখন দিল্লীতে ছিলাম। দেশে ফিরে শুনি পিস টিভি ব্যান করা হয়েছে বাংলাদেশে, এবং তার আগে ইন্ডিয়াতে। আমার বাসায় টিভি নেই, এবং আমি জাকির নায়েকের লেকচার শুনিও না। কিংবা পিস টিভিতে যারা লেকচার দেন, বাংলা কিংবা ইংলিশ -- কোনোটাই শুনি না; প্রয়োজন হয় না। তাছাড়া আমার ইসলামের বুঝ জাকির নায়েকসহ পিস টিভি ও তার বক্তাদেরকে ইন জেনারেল আমার কাছে অগ্রহণযোগ্য করে তুলেছে। Peace TV বন্ধ হওয়ায় এদেশে বিকৃত ইসলাম প্রসারের গতি কমলো -- এটাই আমার মনে হয়েছে। একইসাথে আমি এটাও মনে করি যে, যেই অভিযোগ পিস টিভিকে ব্যান করা হয়েছে, তা নিছক অজুহাত। জাকির নায়েক কখনো জঙ্গীবাদকে উস্কে দিয়েছেন বলে আমার জানা নেই। কিংবা পিস টিভির লেকচার শুনে শুনে ISIS জঙ্গীরা সন্ত্রাসী হয়েছে -- এটা নিতান্তই হাস্যকর কথা। ISIS এর ধর্মতাত্ত্বিক বেইজ সম্পর্কে মোটেও ধারণা নেই, এমন লোকের পক্ষেই কেবল ISIS এর জন্য জাকির নায়েককে দোষ দেয়া সম্ভব। একইসাথে আমি এ বিষয়েও সচেতন যে, পিস টিভি বন্ধ করা হয়েছে আমাদের সরকারের রেগুলার “ইসলামবিরোধী কর্মকাণ্ডের অংশ