সেপ্টেম্বর ১১, ২০১৩ :
খবরের সত্যাসত্য যাচাই করে নেওয়া মুসলমানদের দায়িত্ব। সিরিয়া বিষয়ে পশ্চিমা মিডিয়ার তৈরী করা নিউজের উপর ভিত্তি করে যেসব ইসলামপন্থী (!) অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট (!) লেখালেখি করেছেন আসাদের বিরুদ্ধে, তাদের আরো সতর্ক হওয়া উচিত ছিলো। মানুষের মাঝে ভ্রান্তি ছড়ানো অত্যন্ত গর্হিত কাজ।
"মুমিনগণ ! যদি কোনো পাপাচারী ব্যক্তি তোমাদের কাছে কোনো সংবাদ আনয়ন করে, তবে তোমরা তা পরীক্ষা করে দেখবে, যাতে অজ্ঞতাবশতঃ তোমরা কোনো সম্প্রদায়ের ক্ষতিসাধনে প্রবৃত্ত না হও এবং পরে নিজেদের কর্মের জন্যে অনুতপ্ত না হও।" (সূরা আল-হুজুরাত, ৪৯:৬)
"সিরিয়ায় কথিত রাসায়নিক হামলার পর বিদ্রোহী গোষ্ঠী ও পশ্চিমা মিডিয়ার সরবরাহ করা লাশের ভুয়া ছবিগুলো ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ব্যাপকভাবে শেয়ার করেছিলেন কতিপয় ইসলামপন্থী(!) অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট। তখন আমিসহ অনেকেই বলেছিলাম- মিশরের পরিস্থিতি থেকে দৃষ্টি ভিন্ন দিকে ঘুরানোর জন্যই এই নাটক সাজানো হয়েছে। কিন্তু কথিত ইসলামপন্থীদের কাছে এ বক্তব্য গ্রহণযোগ্য হচ্ছিল না। তারা পাশ্চাত্যের মিডিয়ার মিথ্যাচারকে কুরআনের বাণীর মত বিশ্বাস করে যাচ্ছিল। কিন্তু এরপর একের পর এক সত্য প্রকাশিত হতে শুরু করল। বার্তা সংস্থা এপি জানাল- সিরিয়ার বিদ্রোহীদের কাছে রাসায়নিক বোমা তেলআবিবের মাধ্যমে সরবরাহ করেছে সৌদি আরব। তারাই সিরিয় সরকারের ওপর দোষ চাপাতে রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করেছে। আর আজ জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে-প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, “যেখান থেকে তারা নমুনা সংগ্রহ করেছেন সেখানে রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহৃত হয়েছে কি-না, কীভাবে ব্যবহার করা হয়েছে বা কারা ব্যবহার করেছে তার কিছুই গৃহিত নমুনা থেকে প্রমাণিত হয়নি। তবে এটি প্রমাণিত হয়েছে যে, সেখানে যারা মারা গেছে তাদের মৃত্যু হয়েছে ‘প্রচলিত অস্ত্র দিয়ে অবৈধ হামলার’ মাধ্যমে।”
জাতিসংঘের একটি সংস্থা বলেছে, বিদ্রোহীরা সিরিয়ায় মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ করে যাচ্ছে। সম্ভবত এ কারণেই যুদ্ধবাজ ওবামা প্রশাসন সিরিয়ায় হামলা থেকে পিছিয়ে এসেছে। কিন্তু যারা আসাদের বিরুদ্ধে অনলাইনে এতদিন অপপ্রচার চালালেন তারা কি তাদের ভুল বুঝতে পেরেছেন-খুব জানতে ইচ্ছে করে।"
status courtesy : আশরাফ ভাই।
সেপ্টেম্বর ১১, ২০১৩ :
রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের মার্কিন অভিযোগ প্রসঙ্গে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ বলেছেন, "তাদের দাবি যদি সত্য হয়ে থাকে তাহলে তারা প্রমাণ দেখাক। জাতিসংঘের কাছে ও গণমাধ্যমের কাছে প্রমাণ তুলে ধরুক। প্রমাণ ছাড়া কিভাবে অভিযোগ করছে তারা? যে এলাকায় আমার সরকার রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করেছে বলে তারা অভিযোগ করছে তার কিছু ছবি ও ভিডিও তারা দেখাচ্ছে। সেখানে কী আমাদের পুলিশ বা সশস্ত্র বাহিনীর কোনো ছবি বা ভিডিও আছে? এটা তো অভিযোগ মাত্র, প্রমাণ নয়।"
দুঃখজনকভাবে, প্রমাণ ছাড়াই ইসলামপন্থী অনেককে দেখছি রাসায়নিক অস্ত্র প্রয়োগের জন্য আসাদ সরকারকে দায়ী করছেন। আসাদ যদি অত্যন্ত ঘৃণ্য অপরাধীও হয়, তবুও যা সে করে নাই, সে অপবাদ তার উপরে চাপিয়ে দেয়া সম্পূর্ণ ইসলাম বিরুদ্ধ কাজ। এসব অভিযোগের ক্ষেত্রে বর্তমান যুগে ছবিকেও প্রমাণ হিসেবে গ্রহণ করা কঠিন। এসব ক্ষেত্রে ন্যুনতম প্রমাণ হলো ভিডিও। তারপরও যদি ভিডিওতে দেখেন যে সিরীয় আর্মি বা পুলিশের ড্রেস পরা কয়েকজন লোক রাসায়নিক অস্ত্র হামলা করছে সাধারণ মানুষের উপর (ক্যামেরার সামনে !), সেক্ষেত্রেও নিশ্চিত হওয়া যায় না, কারণ বিদ্রোহীরাও পুলিশ বা আর্মির ড্রেস পরে থাকতে পারে। কিছুদিন আগে লীগ নেতা মিল্ক ভিটা না কে যেনো মারা গেলো, মনে আছে ? তাকে হত্যার দৃশ্য ঘটনাক্রমে একটা দোকানের সিসিটিভিতে ধরা পড়ে গিয়েছিলো। ভিডিওটা আমি দেখেছিলাম। যে লোক তাকে হত্যা করলো, সে পাঞ্জাবি-পায়জামা পরা ছিলো। ভাগ্যিস তার চেহারা ক্যামেরায় ধরা পড়েছিলো বলে হত্যাকারী লীগ নেতাকে শনাক্ত করা গেছে। যদি তা না হতো, তবে ঐ সিসিটিভির ভিডিও ব্যাপকভাবে প্রচার করা হতো এই বলে যে জামাত-শিবির গুলি করেছে। কিংবা হেফাজত কর্মী গুলি করেছে।
প্রমাণ কী জিনিস ! প্রমাণ বড় কঠিন জিনিস !
অথচ ভিডিও প্রমাণ তো দূরের কথা, সিরীয় আর্মি / পুলিশের পোশাক পরা লোক রাসায়নিক অস্ত্র প্রয়োগ করছে, অন্ততঃ এমন একটি (ফোটোশপ করা) ছবি পর্যন্ত উপস্থাপন কেউ করতে পারেনি, অথচ তারা বলে চলেছে যে আসাদ সরকার রাসায়নিক অস্ত্র প্রয়োগ করেছে। এমনকি (হঠাৎ গজিয়ে ওঠা) ইসলামপন্থীদেরকেও ফেসবুকে তা লিখতে দেখছি। (অবশ্য তারা লিখবেনই, কারণ তারা "বিশেষভাবে" "হঠাৎ গজিয়ে ওঠা।")
(যদ্দুর মনে পড়ে) শাহবাগীরা এসে আমার এক ফেসবুক নোটে ঝগড়া শুরু করেছিলো। তারা হেফাজতের ২৫০০ হত্যার পক্ষে ছবি নয়, ভিডিও প্রমাণ চায়। অথচ চেতনার এই ব্যবসায়ীদেরকে তাদের দাবীকৃত ১৯৭১ এর ত্রিশ লক্ষের ভিডিও উপস্থাপন করতে বললে গালিগালাজ শুরু করে। এমনকি (অন্ততঃ ফোটোশপ করা) ছবি পর্যন্ত উপস্থাপন করতে পারে না !
হেফাজতের উপর ৫ই মে গণহত্যা হয়েছে, এটা সত্য।
১৯৭১ এ-ও গণহত্যা হয়েছিলো, এটা সত্য।
আমরা ইন্টারনেটে ভিডিও-ও দেখেছি যে (খুব সম্ভবত) রাসায়নিক অস্ত্রের কারণেই বাচ্চারা মারা যাচ্ছে, অথচ তাদের গায়ে বাহ্যিক কোনো ক্ষত নেই।
যতটুকু নিশ্চিত জানি, প্রচার করলে ততটুকুই প্রচার করা উচিত, এর বেশি নয়। আর তথ্যের সত্যাসত্য নির্ণয় করা ছাড়াও মুসলমানদের আরো গুরুত্বপূর্ণ অনেক কাজ আছে। যেমন, ইসলাম প্রচার করা।
You cannot lie to support truth. সত্যের পক্ষে কখনোই মিথ্যা বলা যাবে না। মিথ্যা কথা, যুক্তি বা প্রমাণ কখনোই সত্যকে প্রতিষ্ঠিত করে না। সত্যকে কেবল সত্য দ্বারাই প্রতিষ্ঠিত করা সম্ভব। প্রমাণহীন বিষয়ে বিশ্বাস করা কখনোই উচিত নয়, হোক তা নিজের পক্ষে বা বিপক্ষে।
( আসাদের বক্তব্য নিয়ে নিউজ : http://goo.gl/zZr6c6 )
সেপ্টেম্বর ১০, ২০১৩ :
নিউজ : অবশেষে হোয়াইট হাউজ স্বীকার করলো : তাদের কাছে অকাট্য প্রমাণ নেই যে সিরিয়ার সরকারই এই হামলা চালিয়েছে। ( http://goo.gl/PqWPHM )
যেখানে সিরিয়া সরকারের বড় শত্রু-ই হামলার ওজুহাতের পক্ষে অকাট্য প্রমাণ দাঁড় করাতে পারছে না, সেখানে কী করে মুসলমানদের একটি দল একথায় বিশ্বাস করে যে "আসাদ-ই হামলা চালিয়েছে"?
অথচ একজন মুসলমান কি প্রমাণ ছাড়া কথায় বিশ্বাস করতে পারে? কোরআন কি আমাদের সেই শিক্ষা দেয় যে আমরা সুইপিং স্টেটমেন্ট এর উপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্ত দেবো?
"তারা কেনো এ ব্যাপারে চার জন সাক্ষী উপস্থিত করেনি; অতঃপর যখন তারা সাক্ষী উপস্থাপন করেনি, তখন তারাই আল্লাহর কাছে মিথ্যাবাদী।" (সূরা আন-নূর, ২৪:১৩)
আসাদ-ই রাসায়নিক হামলা চালিয়েছে, এই অভিযোগ করে কি আমরা আল্লাহর কাছে মিথ্যাবাদী হয়ে যাবো না?
"হে মুমিনগণ, তোমরা আল্লাহর উদ্দেশ্যে ন্যায় সাক্ষ্যদানের ব্যাপারে অবিচল থাকবে এবং কোনো সম্প্রদায়ের শত্রুতার কারণে কখনও ন্যায়বিচার পরিত্যাগ কোরো না। সুবিচার করো। এটাই খোদাভীতির অধিক নিকটবর্তী। আল্লাহকে ভয় করো। তোমরা যা করো, নিশ্চয়ই আল্লাহ সে বিষয়ে খুব জ্ঞাত।" (সূরা মায়েদা, ৫:৮)
শুধুমাত্র শিয়াদের প্রতি বা ইরানের প্রতি বিদ্বেষবশতঃ আসাদের বিরোধিতা করা এবং সেইজন্যেই আমেরিকা-সমর্থিত আন-নূসরাকে সমর্থন করা কি মোটেও যৌক্তিক ?
তথ্য-প্রমাণের কুরানিক পদ্ধতিতে বিশ্বাস না করে মার্কিন নিয়ন্ত্রিত মিডিয়ার দেয়া তথ্যের উপর ভিত্তি করে আমরা যদি সিদ্ধান্ত দেই, তবে কি আমরা কোরআন অনুযায়ী ফয়সালা করলাম, নাকি কোরআনের বিপরীতে গেলাম ? সূরা মায়েদার ৪৪, ৪৫ ও ৪৭ নং আয়াতে আল্লাহ বলে দিচ্ছেন যে, যেসব লোক আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন, তদনুযায়ী ফয়সালা করে না, তারাই কাফের, জালেম ও পাপাচারী।
নিশ্চিত না হলে কি এটা বলাই ভালো নয় যে আমি জানি না, বা আমি নিশ্চিত নই ?
খবরের সত্যাসত্য যাচাই করে নেওয়া মুসলমানদের দায়িত্ব। সিরিয়া বিষয়ে পশ্চিমা মিডিয়ার তৈরী করা নিউজের উপর ভিত্তি করে যেসব ইসলামপন্থী (!) অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট (!) লেখালেখি করেছেন আসাদের বিরুদ্ধে, তাদের আরো সতর্ক হওয়া উচিত ছিলো। মানুষের মাঝে ভ্রান্তি ছড়ানো অত্যন্ত গর্হিত কাজ।
"মুমিনগণ ! যদি কোনো পাপাচারী ব্যক্তি তোমাদের কাছে কোনো সংবাদ আনয়ন করে, তবে তোমরা তা পরীক্ষা করে দেখবে, যাতে অজ্ঞতাবশতঃ তোমরা কোনো সম্প্রদায়ের ক্ষতিসাধনে প্রবৃত্ত না হও এবং পরে নিজেদের কর্মের জন্যে অনুতপ্ত না হও।" (সূরা আল-হুজুরাত, ৪৯:৬)
"সিরিয়ায় কথিত রাসায়নিক হামলার পর বিদ্রোহী গোষ্ঠী ও পশ্চিমা মিডিয়ার সরবরাহ করা লাশের ভুয়া ছবিগুলো ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে ব্যাপকভাবে শেয়ার করেছিলেন কতিপয় ইসলামপন্থী(!) অনলাইন অ্যাক্টিভিস্ট। তখন আমিসহ অনেকেই বলেছিলাম- মিশরের পরিস্থিতি থেকে দৃষ্টি ভিন্ন দিকে ঘুরানোর জন্যই এই নাটক সাজানো হয়েছে। কিন্তু কথিত ইসলামপন্থীদের কাছে এ বক্তব্য গ্রহণযোগ্য হচ্ছিল না। তারা পাশ্চাত্যের মিডিয়ার মিথ্যাচারকে কুরআনের বাণীর মত বিশ্বাস করে যাচ্ছিল। কিন্তু এরপর একের পর এক সত্য প্রকাশিত হতে শুরু করল। বার্তা সংস্থা এপি জানাল- সিরিয়ার বিদ্রোহীদের কাছে রাসায়নিক বোমা তেলআবিবের মাধ্যমে সরবরাহ করেছে সৌদি আরব। তারাই সিরিয় সরকারের ওপর দোষ চাপাতে রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করেছে। আর আজ জাতিসংঘের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে-প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, “যেখান থেকে তারা নমুনা সংগ্রহ করেছেন সেখানে রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহৃত হয়েছে কি-না, কীভাবে ব্যবহার করা হয়েছে বা কারা ব্যবহার করেছে তার কিছুই গৃহিত নমুনা থেকে প্রমাণিত হয়নি। তবে এটি প্রমাণিত হয়েছে যে, সেখানে যারা মারা গেছে তাদের মৃত্যু হয়েছে ‘প্রচলিত অস্ত্র দিয়ে অবৈধ হামলার’ মাধ্যমে।”
জাতিসংঘের একটি সংস্থা বলেছে, বিদ্রোহীরা সিরিয়ায় মানবতার বিরুদ্ধে অপরাধ করে যাচ্ছে। সম্ভবত এ কারণেই যুদ্ধবাজ ওবামা প্রশাসন সিরিয়ায় হামলা থেকে পিছিয়ে এসেছে। কিন্তু যারা আসাদের বিরুদ্ধে অনলাইনে এতদিন অপপ্রচার চালালেন তারা কি তাদের ভুল বুঝতে পেরেছেন-খুব জানতে ইচ্ছে করে।"
status courtesy : আশরাফ ভাই।
সেপ্টেম্বর ১১, ২০১৩ :
রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহারের মার্কিন অভিযোগ প্রসঙ্গে সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ বলেছেন, "তাদের দাবি যদি সত্য হয়ে থাকে তাহলে তারা প্রমাণ দেখাক। জাতিসংঘের কাছে ও গণমাধ্যমের কাছে প্রমাণ তুলে ধরুক। প্রমাণ ছাড়া কিভাবে অভিযোগ করছে তারা? যে এলাকায় আমার সরকার রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করেছে বলে তারা অভিযোগ করছে তার কিছু ছবি ও ভিডিও তারা দেখাচ্ছে। সেখানে কী আমাদের পুলিশ বা সশস্ত্র বাহিনীর কোনো ছবি বা ভিডিও আছে? এটা তো অভিযোগ মাত্র, প্রমাণ নয়।"
দুঃখজনকভাবে, প্রমাণ ছাড়াই ইসলামপন্থী অনেককে দেখছি রাসায়নিক অস্ত্র প্রয়োগের জন্য আসাদ সরকারকে দায়ী করছেন। আসাদ যদি অত্যন্ত ঘৃণ্য অপরাধীও হয়, তবুও যা সে করে নাই, সে অপবাদ তার উপরে চাপিয়ে দেয়া সম্পূর্ণ ইসলাম বিরুদ্ধ কাজ। এসব অভিযোগের ক্ষেত্রে বর্তমান যুগে ছবিকেও প্রমাণ হিসেবে গ্রহণ করা কঠিন। এসব ক্ষেত্রে ন্যুনতম প্রমাণ হলো ভিডিও। তারপরও যদি ভিডিওতে দেখেন যে সিরীয় আর্মি বা পুলিশের ড্রেস পরা কয়েকজন লোক রাসায়নিক অস্ত্র হামলা করছে সাধারণ মানুষের উপর (ক্যামেরার সামনে !), সেক্ষেত্রেও নিশ্চিত হওয়া যায় না, কারণ বিদ্রোহীরাও পুলিশ বা আর্মির ড্রেস পরে থাকতে পারে। কিছুদিন আগে লীগ নেতা মিল্ক ভিটা না কে যেনো মারা গেলো, মনে আছে ? তাকে হত্যার দৃশ্য ঘটনাক্রমে একটা দোকানের সিসিটিভিতে ধরা পড়ে গিয়েছিলো। ভিডিওটা আমি দেখেছিলাম। যে লোক তাকে হত্যা করলো, সে পাঞ্জাবি-পায়জামা পরা ছিলো। ভাগ্যিস তার চেহারা ক্যামেরায় ধরা পড়েছিলো বলে হত্যাকারী লীগ নেতাকে শনাক্ত করা গেছে। যদি তা না হতো, তবে ঐ সিসিটিভির ভিডিও ব্যাপকভাবে প্রচার করা হতো এই বলে যে জামাত-শিবির গুলি করেছে। কিংবা হেফাজত কর্মী গুলি করেছে।
প্রমাণ কী জিনিস ! প্রমাণ বড় কঠিন জিনিস !
অথচ ভিডিও প্রমাণ তো দূরের কথা, সিরীয় আর্মি / পুলিশের পোশাক পরা লোক রাসায়নিক অস্ত্র প্রয়োগ করছে, অন্ততঃ এমন একটি (ফোটোশপ করা) ছবি পর্যন্ত উপস্থাপন কেউ করতে পারেনি, অথচ তারা বলে চলেছে যে আসাদ সরকার রাসায়নিক অস্ত্র প্রয়োগ করেছে। এমনকি (হঠাৎ গজিয়ে ওঠা) ইসলামপন্থীদেরকেও ফেসবুকে তা লিখতে দেখছি। (অবশ্য তারা লিখবেনই, কারণ তারা "বিশেষভাবে" "হঠাৎ গজিয়ে ওঠা।")
(যদ্দুর মনে পড়ে) শাহবাগীরা এসে আমার এক ফেসবুক নোটে ঝগড়া শুরু করেছিলো। তারা হেফাজতের ২৫০০ হত্যার পক্ষে ছবি নয়, ভিডিও প্রমাণ চায়। অথচ চেতনার এই ব্যবসায়ীদেরকে তাদের দাবীকৃত ১৯৭১ এর ত্রিশ লক্ষের ভিডিও উপস্থাপন করতে বললে গালিগালাজ শুরু করে। এমনকি (অন্ততঃ ফোটোশপ করা) ছবি পর্যন্ত উপস্থাপন করতে পারে না !
হেফাজতের উপর ৫ই মে গণহত্যা হয়েছে, এটা সত্য।
১৯৭১ এ-ও গণহত্যা হয়েছিলো, এটা সত্য।
আমরা ইন্টারনেটে ভিডিও-ও দেখেছি যে (খুব সম্ভবত) রাসায়নিক অস্ত্রের কারণেই বাচ্চারা মারা যাচ্ছে, অথচ তাদের গায়ে বাহ্যিক কোনো ক্ষত নেই।
যতটুকু নিশ্চিত জানি, প্রচার করলে ততটুকুই প্রচার করা উচিত, এর বেশি নয়। আর তথ্যের সত্যাসত্য নির্ণয় করা ছাড়াও মুসলমানদের আরো গুরুত্বপূর্ণ অনেক কাজ আছে। যেমন, ইসলাম প্রচার করা।
You cannot lie to support truth. সত্যের পক্ষে কখনোই মিথ্যা বলা যাবে না। মিথ্যা কথা, যুক্তি বা প্রমাণ কখনোই সত্যকে প্রতিষ্ঠিত করে না। সত্যকে কেবল সত্য দ্বারাই প্রতিষ্ঠিত করা সম্ভব। প্রমাণহীন বিষয়ে বিশ্বাস করা কখনোই উচিত নয়, হোক তা নিজের পক্ষে বা বিপক্ষে।
( আসাদের বক্তব্য নিয়ে নিউজ : http://goo.gl/zZr6c6 )
সেপ্টেম্বর ১০, ২০১৩ :
নিউজ : অবশেষে হোয়াইট হাউজ স্বীকার করলো : তাদের কাছে অকাট্য প্রমাণ নেই যে সিরিয়ার সরকারই এই হামলা চালিয়েছে। ( http://goo.gl/PqWPHM )
যেখানে সিরিয়া সরকারের বড় শত্রু-ই হামলার ওজুহাতের পক্ষে অকাট্য প্রমাণ দাঁড় করাতে পারছে না, সেখানে কী করে মুসলমানদের একটি দল একথায় বিশ্বাস করে যে "আসাদ-ই হামলা চালিয়েছে"?
অথচ একজন মুসলমান কি প্রমাণ ছাড়া কথায় বিশ্বাস করতে পারে? কোরআন কি আমাদের সেই শিক্ষা দেয় যে আমরা সুইপিং স্টেটমেন্ট এর উপর ভিত্তি করে সিদ্ধান্ত দেবো?
"তারা কেনো এ ব্যাপারে চার জন সাক্ষী উপস্থিত করেনি; অতঃপর যখন তারা সাক্ষী উপস্থাপন করেনি, তখন তারাই আল্লাহর কাছে মিথ্যাবাদী।" (সূরা আন-নূর, ২৪:১৩)
আসাদ-ই রাসায়নিক হামলা চালিয়েছে, এই অভিযোগ করে কি আমরা আল্লাহর কাছে মিথ্যাবাদী হয়ে যাবো না?
"হে মুমিনগণ, তোমরা আল্লাহর উদ্দেশ্যে ন্যায় সাক্ষ্যদানের ব্যাপারে অবিচল থাকবে এবং কোনো সম্প্রদায়ের শত্রুতার কারণে কখনও ন্যায়বিচার পরিত্যাগ কোরো না। সুবিচার করো। এটাই খোদাভীতির অধিক নিকটবর্তী। আল্লাহকে ভয় করো। তোমরা যা করো, নিশ্চয়ই আল্লাহ সে বিষয়ে খুব জ্ঞাত।" (সূরা মায়েদা, ৫:৮)
শুধুমাত্র শিয়াদের প্রতি বা ইরানের প্রতি বিদ্বেষবশতঃ আসাদের বিরোধিতা করা এবং সেইজন্যেই আমেরিকা-সমর্থিত আন-নূসরাকে সমর্থন করা কি মোটেও যৌক্তিক ?
তথ্য-প্রমাণের কুরানিক পদ্ধতিতে বিশ্বাস না করে মার্কিন নিয়ন্ত্রিত মিডিয়ার দেয়া তথ্যের উপর ভিত্তি করে আমরা যদি সিদ্ধান্ত দেই, তবে কি আমরা কোরআন অনুযায়ী ফয়সালা করলাম, নাকি কোরআনের বিপরীতে গেলাম ? সূরা মায়েদার ৪৪, ৪৫ ও ৪৭ নং আয়াতে আল্লাহ বলে দিচ্ছেন যে, যেসব লোক আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন, তদনুযায়ী ফয়সালা করে না, তারাই কাফের, জালেম ও পাপাচারী।
নিশ্চিত না হলে কি এটা বলাই ভালো নয় যে আমি জানি না, বা আমি নিশ্চিত নই ?
মন্তব্যসমূহ
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন