সরাসরি প্রধান সামগ্রীতে চলে যান

বাংলাদেশের রাজনীতি - জাফর ইকবাল

নভেম্বর ২৭, ২০১৩ :
::জাফর ইকবালকে স্যার বলা প্রসঙ্গে::

জাফর ইকবাল শাবিপ্রবিতে কিছু ছেলেমেয়েকে কম্পিউটার সায়েন্স শিক্ষা দেন। আমিও কম্পিউটার বিজ্ঞানের ছাত্র। তবে প্রোগ্রামার হওয়া মানে এই নয় যে "শিক্ষক" এর সংজ্ঞাকে এতটাই সীমিত করে আনবো যে, যে কেউ-ই আমাকে প্রোগ্রামিঙের যোগ-বিয়োগ-ব্র্যাকেটস-সেমিকোলন শিখাবে, তাকেই আমার "শিক্ষক" বলে বসবো !

একবার এক কুকুরের বাচ্চাকে একটা গাড়ি চাপা দিয়ে গেলে মাদী কুকুরটি তার সন্তানের লাশের পাশে ঘুরছিলো এবং উচ্চস্বরে কান্না করছিলো। পাশ দিয়ে একটি ট্যাক্সি চলে গেলো, সে ঐ চলন্ত গাড়িরই চাকা কামড়ে ধরতে গেলো। সেদিন ঐ কুকুরের চারপাশে মানুষ জড়ো হয়ে গিয়েছিলো। লোকে বলছিলো -- "মায়ের মন ! আমারই তো খারাপ লাগছে !"
সেই কুকুরটির কাছ থেকে অনেক মানুষের মায়া-মমতা শিক্ষা করা উচিত। যারা আজকে গুলি করে শত শত মানুষ মারছে, তাদের শিক্ষা নেয়া উচিত ঐ কুকুরটির কাছ থেকে। কিন্তু তারপরও আমি বলবো না -- ঐ কুকুর আমাদের শিক্ষক হয়ে গিয়েছে !

হ্যাঁ, জাফর ইকবাল কম্পিউটার সায়েন্সের প্রফেসর। মেশিনের কার্যক্রম পড়ানোতে সীমাবদ্ধ থাকলে তাকে আর কেউ কিছু বলতো না। বরং কোথাও দেখা হলে যদি জানতে পারতো যে তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন প্রফেসর, তবে মানুষ ঠিকই তাকে সম্মান করতো -- তা তিনি ব্যক্তিজীবনে যেমনই হোন না কেনো।

কিন্তু যখন সে এদেশের শিশু ও তরুণদেরকে ম্যানিপুলেট করা শুরু করলো, ইসলামকে হেয় করা শুরু করলো, দাড়ি-টুপি-অলাদের তুচ্ছ-তাচ্ছিল্য করা শিখালো তার লেখালেখির মাধ্যমে, ইসলামী পোশাক বোরকার বিরোধিতা করলো তার লেখায়, নির্লজ্জভাবে এই খুনী সরকারের অগণিত খুনের পক্ষে সাফাই গেয়ে চললো, দালালী করে চললো প্রথম আলোসহ বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায়, বৃষ্টির মত গুলিবর্ষণ করে যেই শিবিরের ছেলেদের হত্যা করছে এই সরকার, সেই শিবিরের ছেলেদের বিরুদ্ধে বিদ্বেষমূলক বক্তব্য পত্রিকায় প্রকাশ করলো, শাহবাগে যখন ইসলামের বিরুদ্ধে প্রকাশ্য মুভমেন্ট শুরু হলো, তাতে সে সমর্থন দিলো, যুদ্ধাপরাধের বিচারের নামে নিরপরাধ কিছু মানুষকে হত্যার জঘন্য ষড়যন্ত্রে শামিল হলো, কুরআন প্রচারক আল্লামা সাঈদীর বিরুদ্ধে মিথ্যা সাক্ষী হিসেবে তালিকাভুক্ত হলো, জাবি ভিসির পক্ষে নির্লজ্জ দালালী করলো, শাপলা চত্ত্বরে হেফাজতের সমাবেশে গভীর রাতে সরকার কর্তৃক সংঘটিত নৃশংস গণহত্যার পক্ষে সাফাই গাইলো -- আমি আর কত তালিকা করবো ?

হ্যাঁ, আমিতো খুব স্পষ্টই দেখতে পাচ্ছি, জাফর ইকবাল কিছু মানুষের জন্য শিক্ষক হয়ে উঠেছে, "স্যার" হয়ে উঠেছে। তবে সেই মানুষগুলোর সাথে আমি এক কাতারে নেই। সেই মানুষগুলোর সাথে এদেশের অধিকাংশ মানুষ এক কাতারে নেই। যাদের কাছে আজকে জাফর ইকবাল "শিক্ষক" হয়ে উঠেছে, সেই মানুষগুলো হয় খুনী, নয়তো খুনীর সমর্থক। তারা প্রকাশ্যে কিংবা গোপনে আল্লাহর অবাধ্যতায় মেতে উঠেছে। তাদের সাথে মুসলমানদের কোনো সম্পর্ক থাকতে পারে না। জাফর ইকবাল পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ কম্পিউটার সায়েন্টিস্ট হলেও আমি তার ধ্বংস কামনা করি। কারণ খুব ভালো কম্পিউটার সায়েন্টিস্ট না হলেও আমি বেঁচে থাকতে পারবো, কিন্তু ভালো মানুষ হতে না পারলে আল্লাহর পাকড়াও থেকে কিছুতেই বাঁচতে পারবো না।


অগাস্ট ৩০, ২০১৩ :

যুক্তিতে না পেরে শিক্ষক ও সন্তানে কাল্পনিক গল্পের অবতারণা করলেন। বাস্তব দুনিয়া আপনার লেখা নাটকের স্ক্রিপ্ট অনুযায়ী চলে না। বাস্তবে ঐ শিক্ষকদের সাথে সাথে তাদের সন্তানেরাও ভুক্তভোগী হয়ে থাকে, এবং হঠাৎ করেই নাটকীয়ভাবে সব শুনে "চোখ বড় বড় করে" তাকিয়ে থাকে না, বরং তারা গোড়া থেকেই প্রকৃত সত্য ঘটনা সবিস্তারে জেনে থাকে।.
"কিন্তু আগেই নিজেরা শাস্তি দিয়ে একজনকে তার মানবাধিকার লঙ্ঘন করা হবে সেটি কোন দেশের বিচার?" -- এই একই কথা যুদ্ধাপরাধের অভিযোগে অভিযুক্ত ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে মনে থাকে না? বিচার করে রায় দেয়ার পরে তো দূরের কথা, আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিল, তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল এমনকি তারও আগে, ট্রাইব্যুনাল গঠনের আগে থেকেই যে ঐ ব্যক্তিদেরকে গোয়েন্দা নজরদারীতে কার্যত গৃহবন্দী করে রাখা হয়েছিলো, হজ্জ্ব পালন করতে দেয়া হয়নি -- সেটা কি মানবাধিকার লঙ্ঘন নয়?
জেলে আটকে রাখা হয় শাস্তিস্বরূপ। আর এই ব্যক্তিগুলোকে প্রথমে বিনা ওয়ারেন্টে আটকে মাসের পর মাস, বছারাধিককাল জেলে আটকে রেখে তারপর আনুষ্ঠানিক অভিযোগ ও তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করলো, তা-ও বারবার প্রতিবেদন দাখিলের সময় প্রসিকিউশন চেয়ে নিলো, -- এই এতগুলো মাস ঐ ব্যক্তিদের আটকে রাখা কি মানবাধিকার লঙ্ঘন নয়? এটা কোন দেশের আইন? অথচ এই ট্রাইব্যুনালকে তো ঠিকই সমর্থন করলেন।.

"পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে একটা খুব ভয়ঙ্কর উদাহরণ তৈরি হলো। কোনো একজন মানুষকে পছন্দ না হলে, তাকে সরানোর জন্য কয়েকজন কিংবা অনেকজন মানুষ একত্র হয়ে তাকে একটা ঘরে আটকে ফেলতে পারবেন। এর জন্য কাউকে কৈফিয়ত দিতে হবে না। দেশের আইনে তাদের স্পর্শ করবে না।".
একইভাবে কি শাহবাগে প্রেতসাধকের মত করে "ফাঁসি চাই ফাঁসি চাই" করে আপনারা দেশে ভয়ঙ্কর উদাহরণ তৈরী করলেন না? এই উদাহরণ কি তৈরী করলেন না যে, বিরুদ্ধ মতের ব্যক্তির বিচার না চেয়ে তার ফাঁসি দাবী করা যায় প্রকাশ্যে, মানুষের গায়ের চামড়া তুলে নেয়ার হুমকি দেয়া যায় প্রকাশ্যে, এবং সরকার RAB-পুলিশসহ তিন স্তরের নিরাপত্তা বেষ্টনীতে তাদের ঘিরে রাখে?

"নিজেদের ‘অধিকার’ আদায় করার জন্যে ছাত্রছাত্রীদের লেখাপড়া বিষয়টা যদি পুরোপুরি চাপা পড়ে যায়, তাতেও কেউ কিছু মনে করে না।" এই কথাটা কি শাহবাগ আন্দোলনের সময় খেয়াল ছিলো না? বিশ্ববিদ্যালয় এলাকায় রাস্তা আটকে শুধু ছাত্রছাত্রীদের পড়ালেখায় বিঘ্ন তো নয়ই, সেইসাথে কমপক্ষে দুটি বড় বড় হসপিটালের রোগীদের অবর্ণনীয় দুর্ভোগ ভোগ করিয়েছিলেন আপনারাই। সেসময়ে হলের ছেলেদেরকে হুমকি দিয়ে শাহবাগ আন্দোলনে আসতে বলেছিলো ছাত্রলীগ -- তখন পড়ালেখার ক্ষতি হয়নি?


অগাস্ট ২২, ২০১৩ :

১. আদর্শের দ্বন্দ সবসময়ই থাকবে... এবং এটাও সত্য যে এই দ্বন্দটা (হচ্ছে এবং) হবে ইসলামের বিপরীতে বিশ্বের আর সকল আদর্শের সাথে।

২. প্রচার-প্রচারণায় আমরা জাফর ইকবালদেরকে ছাপিয়ে গেলাম কিনা, আমরা ওদের চেয়ে বেশি শক্তিশালী হলাম কিনা, ওদের প্রতিটা নিত্যনতুন সুকৌশলী আঘাতের বিপরীতে আমরা অনুরূপ আঘাত করলাম কিনা, কেবলমাত্র এগুলোর উপর আমাদের সাফল্য নির্ভর করে না। নূহ (আ.) প্রায় নয়শো বছর ধরে ইসলাম প্রচার করা সত্ত্বেও খুব অল্পসংখ্যক লোকই ঈমান এনেছিলো। এর অর্থ এই নয় যে তিনি সফল হতে পারেননি। তিনি সঠিক পন্থায় কাজ করেছেন কিনা, এটিই তাঁর জন্যে সাফল্যের মাপকাঠি। তিনি আল্লাহর দৃষ্টিতে সফল, তা তাঁর জাতির একজনও ঈমান না আনলেও। নূহ (আ.) এর জাতির দূর্ভাগ্য এই যে, তাদের বেশিরভাগই নিজেদের জন্যে জাহান্নাম অবধারিত করে নিয়েছিলো।

জাফর ইকবালদের মত করে আমরা তরুণ সমাজের একটা উল্লেখযোগ্য অংশকে মোহাবিষ্ট করতে পারছি কিনা (তার বিপরীতে অনুরূপ লেখালেখির মাধ্যমে), তা নির্ধারণ করে না আমরা জিতলাম কিনা, বা সফল হয়েছি কিনা। যারা বিভাজনের এই সময়ে ইসলাম ও ইসলামপন্থীদের সাথে না থেকে বিপরীত দলে ভিড়েছে কিংবা নিউট্রাল পজিশনে থাকার চেষ্টা করছে, এমনও হতে পারে যে তারা নিজেদের জন্যে জাহান্নাম নিশ্চিত করেছে, সুতরাং তারা সৎপথে আসবে না -- তা আমরা সঠিক কর্মপন্থায় কাজ করি কিংবা না করি। সুতরাং, যাদের বিপরীতে আমরা লড়ছি অথবা যাদেরকে আমরা সৎপথে আনার চেষ্টা করছি, তাদের অবস্থান (সত্যের পথে আসা-না-আসা) আমাদের সাফল্যের নির্ধারক নয়। বরং আমরা আল্লাহর নির্দেশিত সঠিক পথে কাজ করছি কিনা, সেটাই আমাদের (প্রকৃত) সাফল্যের নির্ধারক -- no matter they come to understanding or not.

৩. নাস্তিকেরা (এবং তাদের সমর্থক শাহবাগিরা) রাজিবকে নিয়ে মিথ্যা প্রচারণা চালিয়ে তাকে মহৎ করতে চেয়েছে। ইসলামের পথে ওদের অনুরূপ কর্মপন্থা আমাদের জন্য বৈধ নয়। এটা খুব সাধারণ একটা থিয়োরী -- you cannot lie to support truth. ইসলাম একটি লক্ষ্য নয়, বরং চলার পথ। ইসলাম যদি চলার পথ না হয়ে লক্ষ্য হতো, তবে আমরা যেকোনো ভালো-খারাপ উপায়ে লক্ষ্য অর্জন করতাম ও পুরস্কৃত হতাম। কিন্তু ইসলাম একট চলার পথ, জীবন বিধান -- সুতরাং, আমরা কখনও যেনো ইসলাম-বিরুদ্ধ কোনোকিছুর সাথে আপোষ না করি, এটা লক্ষ্য রাখতে হবে।

৪. চারিদিকে এত লাশ দেখে আবেগী হয়ে পড়াটাই মুসলমানের পক্ষে স্বাভাবিক। তবে, এর বিপরীতে আমরা কী করলাম, সেটাই প্রশ্ন। প্রশ্ন এই যে, ইসলামের পক্ষে থাকার জন্য ও মুসলমান হবার কারণে যখন বাংলাদেশসহ সারা বিশ্বে অসংখ্য মুসলমানকে প্রতিনিয়ত হত্যা করা হচ্ছে, তখন এর বিপরীতে আমরা যা করছি, তা ইসলামসম্মত কিনা। অথবা আমাদের কী করা উচিত। বসে বসে কান্না করা-ই কি কেবল দরকার, নাকি প্রতিশোধ নেয়া দরকার, নাকি আমাদের মুসলমানদেরকে মৃত্যুর মুখ থেকে রক্ষা করার ডিফেন্সিভ স্ট্যান্ড নেয়া দরকার -- ইত্যাদি বিষয়ে আমাদের আলেমগণ সঠিক উপায়ে আমাদের দিকনির্দেশনা দিচ্ছেন কিনা (কিংবা আদৌ দিচ্ছেন কিনা)।

৫. বর্তমানে চারিদিকের সবকিছু এত বেশি স্পষ্ট যে, ঘটনাগুলো নিজেরাই যথেষ্ট মানুষের বিবেকে আঘাত হানতে। সেজন্যে আমাদের প্রচার-প্রচারণার প্রয়োজন পড়ে না। এমনকি যুক্তিরও উপস্থাপন অপ্রয়োজনীয়। যখন গভীর রাতে নির্বিচারে মানুষ হত্যার ঘটনা শুনে কেউ দুঃখিত, অশ্রুসজল না হয়ে উল্টো নিউট্রাল পজিশন নেবার চেষ্টা করে কিংবা বিপরীতে উল্লাস প্রকাশ করে, তখন আমাদের যুক্তির উপস্থাপন অপ্রয়োজনীয় হয়ে পড়ে। (যেমনিভাবে স্কাইপ কেলেঙ্কারি ফাঁস হবার পরও যখন কিছু মানুষ ট্রাইব্যুনালের পক্ষে কথা বলে, বরং এটা স্বীকার করে না যে গোটা বিষয়টাই সরকারের সাজানো নাটক, তখন তাদের সামনে যুক্তির উপস্থাপনা নিষ্ফল হয়ে পড়ে। কারণ তারা নিজেদের অন্তরকে তালাবদ্ধ করে ফেলেছে। আমরা সত্য প্রকাশ করি বা না করি -- তারা শুনবে না।)
একারণেই বর্তমানে বাংলাদেশ বিভাজনের সময় পার করছে -- সাদা ও কালোর মাঝামাঝি মোটা ধূসর দাগটি ক্রমেই সরু হয়ে আসছে। চারিদিকের ঘটনাগুলি এত বেশি স্ট্রাইকিং যে, ঘটনাগুলো নিজেরাই মানুষের বিবেকে আঘাত করার জন্য যথেষ্ট, আলাদাভাবে প্রচার-প্রচারণা ও যুক্তি উপস্থাপনার প্রয়োজন পড়ে না।

(প্রসঙ্গতঃ, এই সরকার অনেকগুলো বিরোধী মতকে বন্ধ করে দিয়েছে, যা সকলেরই জানা। সেই টিভি চ্যানেলগুলো (including Dignata TV and Islamic TV), অনলাইন ও প্রিন্টের পত্রিকাগুলো (including Amar Desh), সেই কণ্ঠগুলো (অনেক গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিকেই গুম করা হয়েছে, যারা টিমাইমুখ বাঁধসহ দেশের স্বার্থবিরোধী অনেককিছুর বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলো) যদি আজকে বাধামুক্ত থাকতো, তবে হয়তো প্রচার-প্রচারণা হতো ! দেশপ্রেমিকেরা ও মুসলমানেরা প্রচার-প্রচারণা করবে কী করে ! এমনকি প্রিন্টিং প্রেস ও পাবলিকেশান পর্যন্ত সরকার বন্ধ করে দিচ্ছে ! এক আমার দেশ পত্রিকা-ই শাহবাগ নিয়ে সত্য প্রকাশ করে বাংলাদেশে ৬-ই এপ্রিলের লংমার্চ ও ৫-ই মে'র অবরোধের মত ইতিহাস সৃষ্টি করে দিয়েছে। চিন্তা করে দেখুন বাকি মিডিয়াগুলো খোলা থাকলে আরো কত কী হতে পারতো !)

৬. যুক্তিতে না পেরে কিংবা নিজের ব্যর্থতা ঢাকতে গালি দেয়া অমুসলমিদের কাজ, কোনোভাবেই মুসলমানদের এটা করা সঙ্গত নয়। এক্ষেত্রে এটাই বোঝা যায় যে, ঐ মুসলমান নিজে সঠিকভাবে ইসলাম পালন করছে না : কারণ একজন প্রকৃত মুসলমান কখনোই ব্যর্থ হয় না, গালি দেয় না, এবং যুক্তির অভাবে চুপ হয়ে যায় না।

৭. জাফর ইকবালের গল্প-উপন্যাসের বিপরীতে আমাদের-ও অনুরূপ গল্প-উপন্যাস লিখতে হবে না। বরং মানুষের আচ্ছন্ন বিবেককে স্বচ্ছ করা জন্য জাফর ইকবালের গল্প-উপন্যাসের বিপরীতে আমাদেরকে এমন কৌশল অবলম্বন করতে হবে, যাতে আমরা মানুষকে কোরআনের কাছাকাছি নিয়ে যেতে পারি। যেনো তাদের বিপরীতে আমাদের লেখা "ইসলামী উপন্যাসে" তরুণ সমাজ মশগুল না থেকে তারা কোরআনে মশগুল হয়। আর সেটাই তো সকল সমস্যার সমাধান !

(লেখাটা এই পোস্টের কমেন্টের কিছুটা পরিবর্তিত রূপ : http://goo.gl/ohGon5)

মন্তব্যসমূহ

এই ব্লগটি থেকে জনপ্রিয় পোস্টগুলি

টাকার ইতিহাস, মানি মেকানিজম ও ব্যাঙ্কিং সিস্টেমের মহা জুলুম

ভূমিকা: জালিমের বিরুদ্ধে বুদ্ধিবৃত্তিক সংগ্রাম  (মহররম: ইনফো সিরিজ এর শেষ পোস্ট ছিল এটা। মূল সিরিজটি পড়ে আসুন ) জুলুমের বিরুদ্ধে প্রতিবাদের মাস হলো মহররম মাস। জালিমের মুখোশ উন্মোচনের মাস মহররম। জুলুমের কূটকৌশল উন্মোচনের মাস মহররম। আধুনিক সেকুলার গণতান্ত্রিক ব্যবস্থায় লেজিসলেশান (সংসদ), আর্মড ফোর্সেস (আর্মি) ও জুডিশিয়ারি (আদালত) হলো এক মহা জুলুমের ছদ্মবেশী তিন যন্ত্র, যারা পরস্পর পরস্পরকে সাহায্য করে জুলুম টিকিয়ে রাখার জন্য। তারচেয়েও বড় জালিম হলো big corporations: বড় বড় মাল্টিন্যাশনাল কোম্পানি, যারা তাবৎ দুনিয়াকে দাস বানিয়ে রেখেছে। আর এই দাসত্বের শৃঙ্খলে তারা আমাদেরকে আবদ্ধ করেছে ব্যাঙ্কিং সিস্টেমের মাধ্যমে: টাকা আমাদের শ্রমকে ধারণ করে, অথচ সেই টাকার মূল্য আপ-ডাউন করায় অন্যরা -- ব্যাংক ব্যবসায়ীরা! টাকা আমাদের শ্রমকে সঞ্চয় করার মাধ্যম, অথচ সেই টাকা আমরা প্রিন্ট করি না, প্রিন্ট করে (ব্যাংকের আড়ালে) কিছু ব্যবসায়ী! সেই টাকার মান কমে যাওয়া (বা বেড়ে যাওয়া) আমরা নির্ধারণ করি না -- নির্ধারণ করে ব্যাঙ্ক (ব্যবসায়ীরা)! ইমাম হুসাইনের (আ.) প্রতিবাদী চেতনাকে ধারণ করব, শোকাহত হ

ধর্মব্যবসা: মুসলমানদের হাতে ইসলাম ধ্বংসের অতীত-বর্তমান (১)

ভূমিকা যদিও পলিটিকাল-রিলিজিয়াস ইস্যুতে নিশ্ছিদ্র আর্গুমেন্ট উপস্থাপন করে আলোচনা করার অভ্যাস আমার, কিন্তু এখানে বিস্তারিত ইতিহাস তুলে ধরে আর্গুমেন্ট করার প্রথমতঃ ইচ্ছা নেই, দ্বিতীয়তঃ সময় ও সুযোগ নেই। আমি যা সত্য বলে জানি, তা সংক্ষেপে তুলে ধরছি। যারা আমার উপর আস্থা রাখেন তাদের জন্য এই লেখাটি সোর্স অব ইনফরমেশান, উন্মুক্ত হৃদয়ের মানুষদের জন্য সত্য অনুসন্ধানের নতুন কিছু টপিক, আর প্রেজুডিসড ধর্মান্ধ রোগগ্রস্ত অন্তরের জন্য রোগ বৃদ্ধির উছিলা। শেষ পর্যন্ত আর্গুমেন্ট ও ডায়লগের দুয়ার উন্মুক্ত রাখার পক্ষপাতী আমি, কিন্তু সেই আর্গুমেন্ট অবশ্যই সত্য উন্মোচনের নিয়তে হওয়া উচিত, নিজের দীর্ঘদিনের লালিত বিশ্বাস ও ধ্যান ধারণাকে প্রতিষ্ঠা করবার উদ্দেশ্যে নয়। মক্কা-মদীনা: মুহাম্মদ (সা.) থেকে আলে-সৌদ (৬২৯-১৯২৪) এদেশের অধিকাংশ মানুষ মক্কা-মদীনার ইতিহাস কেবল এতটুকু জানেন যে, মুহাম্মদ (সা.) মদীনায় ইসলামী রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা করেন এবং পরবর্তীতে বিনা রক্তপাতে মক্কা বিজয় করেন। কিন্তু প্রায় চৌদ্দশ’ বছর আগে মুহাম্মদ (সা.) এর প্রতিষ্ঠিত ইসলামী রাষ্ট্র থেকে আজকের রাজতান্ত্রিক সৌদি আরবের ইতিহাস কম মানুষই জানেন। প

পিস টিভি, জাকির নায়েক ও এজিদ প্রসঙ্গ

সম্প্রতি গুলশান হামলার পরিপ্রেক্ষিতে ইন্ডিয়া ও বাংলাদেশে পিস টিভির সম্প্রচার বন্ধ করা হয়েছে। আমি তখন দিল্লীতে ছিলাম। দেশে ফিরে শুনি পিস টিভি ব্যান করা হয়েছে বাংলাদেশে, এবং তার আগে ইন্ডিয়াতে। আমার বাসায় টিভি নেই, এবং আমি জাকির নায়েকের লেকচার শুনিও না। কিংবা পিস টিভিতে যারা লেকচার দেন, বাংলা কিংবা ইংলিশ -- কোনোটাই শুনি না; প্রয়োজন হয় না। তাছাড়া আমার ইসলামের বুঝ জাকির নায়েকসহ পিস টিভি ও তার বক্তাদেরকে ইন জেনারেল আমার কাছে অগ্রহণযোগ্য করে তুলেছে। Peace TV বন্ধ হওয়ায় এদেশে বিকৃত ইসলাম প্রসারের গতি কমলো -- এটাই আমার মনে হয়েছে। একইসাথে আমি এটাও মনে করি যে, যেই অভিযোগ পিস টিভিকে ব্যান করা হয়েছে, তা নিছক অজুহাত। জাকির নায়েক কখনো জঙ্গীবাদকে উস্কে দিয়েছেন বলে আমার জানা নেই। কিংবা পিস টিভির লেকচার শুনে শুনে ISIS জঙ্গীরা সন্ত্রাসী হয়েছে -- এটা নিতান্তই হাস্যকর কথা। ISIS এর ধর্মতাত্ত্বিক বেইজ সম্পর্কে মোটেও ধারণা নেই, এমন লোকের পক্ষেই কেবল ISIS এর জন্য জাকির নায়েককে দোষ দেয়া সম্ভব। একইসাথে আমি এ বিষয়েও সচেতন যে, পিস টিভি বন্ধ করা হয়েছে আমাদের সরকারের রেগুলার “ইসলামবিরোধী কর্মকাণ্ডের অংশ